নিজস্ব প্রতিবেদক।।
শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়ানোর জন্য এবং লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার্থীদের (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির) জন্য প্রকল্প পাঠ অভ্যাস ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) প্রকল্পের বাছাইকৃত ৯৬টি বইয়ের মধ্যে স্বাধীতাবিরোধী ও বিতর্কিত ১১ বই কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
প্রকাশকদের পক্ষ থেকে দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৫শে জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারি করেন। আদালতে ওইদিন আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। তার সঙ্গে ছিলেন এডভোকেট আব্দুল বারি।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রকাশকদের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান আইনজীবী।
রিটকারীদের আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব জানান, গত ২৫শে জানুয়ারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের পাঠ অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য এসিডিটি প্রকল্পের বাছাইকৃত ৯৬টি বইয়ের মধ্যে ১১টি বই কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আবেদনকারীরা হাইকোর্টের ওই রুলের বিষয়টি জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের বই বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয়নি। ফলে উল্লেখিত তারিখে সর্বশেষ যে রুল ইস্যু হয় তা আপনাদের জ্ঞাতার্র্থে দাখিল করা হলো। আশাকরি আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
গত ২৫শে জানুয়ারি চার প্রকাশকের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রুল জারি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বলেন, এসইডিপি প্রকল্পের বই কেনার তালিকার নীতিমালার ১৭ নম্বর ধারা পরিপন্থি দুটি বই আছে। নাসির আলীর বই তালিকাভুক্ত হওয়ায় নীতিমালার ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে উল্লেখ করে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন চার প্রকাশক। তাদের একজন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. কায়সার-ই আলম প্রধান।
রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, নীতিমালায় বলা আছে, এক প্রকাশকের বই অপর প্রকাশকের নামে চালানো যাবে না এবং বই সংগ্রহের নীতিমালার ১৭ নম্বর ধারায় উল্লেখ আছে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কোনো লেখকের গ্রন্থ নির্বাচন করা হবে না। তালিকায় ‘লেবুমামার সপ্তকাণ্ড’ ও ‘বীরবলের খোশগল্প’ বই দুটির লেখক মোহাম্মদ নাসির আলী।
বাংলা একাডেমির চরিতাভিধানে মোহাম্মদ নাসির আলী সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে, অখণ্ড পাকিস্তান রক্ষার পক্ষে তিনি বিবৃতি দিয়েছিলেন এবং ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান রেডিও’র পক্ষ থেকে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের ৩১শে অক্টোবর ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ (এসইডিপি) নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক স্তরে আলাদা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিবর্তে সব প্রকল্পের সমন্বয়ে একটি বৃহৎ কর্মসূচি গ্রহণ করে। পাঁচ বছর মেয়াদি এ কর্মসূচি ২০১৮ থেকে ২০২২ অর্থবছর মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। এ কর্মসূচির প্রাক্কলিত ব্যয় ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ইউএস ডলার (১৭ হাজার ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার)।
এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ১৬ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। বাকি ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়ন দেবে ২২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। বিশ্বব্যাংক আরও ১০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ‘জিএফএফ গ্রান্ট’ হিসেবে প্রদান করবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/০২/০৪/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.