ঢাকাঃ চার মাসের ও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজাতে নির্বাচার হামলা ও বর্বর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান ও চালাচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলি হামলার মুখে দিন-দিন খারাপ অবস্থা হচ্ছে গাজা উপত্যকার। দিনের পর দিন অভুক্ত অবস্থায় থাকতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। এমনকি শিশুরাও অভুক্ত থাকছে, যথাযথ সুরক্ষা পাচ্ছে না নবজাতকেরা।
এমন পরিস্থিতিতে গাজা থেকে বিচ্ছিন্ন উত্তরে বসবাসকারী কিছু বাসিন্দা বেঁচে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে পশু খাদ্য খাচ্ছেন। বেঁচে থাকার জন্য ময়দার বিকল্প হিসেবে পশুখাদ্য পিষে খাচ্ছে গাজাবাসী। এমন হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিই এখন গাজাজুড়ে। খবর বিবিসি।
তবে পশুখাদ্যের মজুদও এখন কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অসহায় এসব গাজাবাসী। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে গাজার উত্তরে শিশুদের মধ্যে তীব্র অপুষ্টি চরমভাবে বেড়েছে। এছাড়া অপুষ্টির কারণে উত্তরের ১৫ শতাংশ শিশুর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।
বেইত লাহিয়ার স্থানীয় চিকিৎসা সহায়তা কর্মী মাহমুদ শালাবি বলেন, মানুষ পশু খাদ্যের জন্য ব্যবহৃত শস্য পিষে পিষে ময়দা তৈরি করছিলেন, কিন্তু তাও এখন ফুরিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, “মানুষ বাজারে এখন পশুখাদ্য ও খুঁজে পাচ্ছেন না। এটি আজকাল গাজার উত্তরে এবং গাজা সিটিতে অপ্রতুল।
তিনি আরও বলেন, ‘বাজার থেকে টিনজাত খাবারের মজুদ ও উধাও হয়ে যাচ্ছে।‘
এদিকে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় সংস্থা ওচা বলছে, গত মাসে গাজার উত্তরে অর্ধেকেরও বেশি ত্রাণ প্রবেশে বাঁধা দিয়েছে ইসরায়েল এবং কীভাবে ও কোথায় ত্রাণ বিতরণ করা হয় তাতে ইসরায়েলি বাহিনীর হস্তক্ষেপ বাড়ছে।
সংস্থাটি আরও বলছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারী আনুমানিক তিন লাখ মানুষ মূল সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন এবং দুর্ভিক্ষের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মুখোমুখি।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার ইসরায়েলের। তাদের দাবি গাজায় কোনো অনাহার নেই। এছাড়া ইসরায়েল গাজায় পাঠানো মানবিক সহায়তার বিতরণে বাঁধা দেয় না বলছে দেশটি।
তবে বাস্তব চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) এই সপ্তাহে বিবিসিকে জানিয়েছে যে, উপত্যকাটির উত্তরে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচটি ত্রাণবাহী ট্রাকের মধ্যে চারটিই ইসরায়েলি বাহিনী থামিয়ে দিয়েছে।
খাবারের পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের মানুষগুলো পানযোগ্য পানির সরবরাহ খুঁজে পেতে লড়াই করছে। এমনকি পানি পাওয়ার জন্য মাটিতে খনন করছে গাজাবাসী।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/০২/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.