খুলনা প্রেস ক্লাবের সহকারী সম্পাদক, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ও স্থানীয় দৈনিক খুলনাঞ্চলের সিনিয়র রিপোর্টার আবদুল জলিলকে ফেনসিডিল দিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোর্সের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার জেরে রোববার সকাল ৯টায় নগরীর মুসলমানপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ওই সাংবাদিকের সহকর্মী অভিযোগ করেছেন।
এদিকে আবদুল জলিলকে গ্রেপ্তারের সময় বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তার স্ত্রী রুনা বেগমকেও হেরোইন ও গাঁজা দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী।
আবদুল জলিলের স্ত্রী রুনা বেগমের অভিযোগ, সকাল ৯টার দিকে কিছু লোক আবদুল জলিলকে খুঁজতে আসেন। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত খেলা দেখায় আবদুল জলিল বাড়িতে নেই বলে জানান তিনি। পরে এক নারী নিজেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিলে তিনি আবদুল জলিলকে ডেকে তোলেন। এরই মধ্যে ওই ব্যক্তিরা দেয়াল টপকে তার বাড়ির ছাদে চলে যান।
তার দাবি, ‘আমাদের বাড়ির বাইরের একটি ড্রেনে ১০ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া গেছে বলে তারা জানান এবং আবদুল জলিলকে সঙ্গে নিয়ে যান। এসময় এসআই মোছাদ্দেক আলী আমার হাত থেকে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে বলে বাড়াবাড়ি করলে তোমাকেও হেরোইন ও গাঁজা দিয়ে ধরিয়ে দেয়া হবে।’
খুলনা ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ দেওয়ান জানান, কিছু দিন আগে ওই এলাকার মাদকদ্রব্যের সোর্স টুটুলকে মাদকসহ আটক করে র্যাব। আবদুল জলিল নিজে ওই সংবাদ করেন এবং অন্যান্য পত্রিকাতেও সরবরাহ করেন। পরে টুটুল জামিনে বের হয়ে এসে আবদুল জলিলকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
সোহাগ জানান, সাত দিন আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান, আবদুল জলিল ও তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি সভায় ছিলেন। সেখানে আবদুল জলিল মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামানকে মুসলমানপাড়া এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর অনুরোধ করেন। রাশেদুজ্জামানও দ্রুত অভিযান চালানোর আশ্বাস দেন। এরই মধ্যে তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনা ঘটল।
এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক পারভীন আকতার বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জলিলের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তল্লাশি করে তার বাড়ির পাশের ড্রেন থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১০ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া গেছে। যেহেতু তার বাড়ির পাশ থেকে পাওয়া গেছে এজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া ফেনসিডিল দিয়ে কিভাবে মামলা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশেই মামলাটি করা হয়েছে।’
এ ঘটনায় খুলনায় সাংবাদিকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.