একটা গল্প দিয়ে শুরু করি৷ শিক্ষক ক্লাসে পড়াচ্ছেন। জসীমউদ্দীনের কবিতা- রাখাল ছেলে৷ ‘রাখাল ছেলে রাখাল ছেলে বারেক ফিরে চাও৷’ তখন একজন শিক্ষার্থী হাত তুলল। উঠে দাড়িয়ে জানতে চাইলো- স্যার, বারেক অর্খ কী?
শিক্ষক বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে ফেলল৷ ধমকের সুরে বলল- ওরে গাধা, বারেক হচ্ছে রাখাল ছেলের নাম। এখানে বলা হয়েছে- বারেক, তুমি ফিরে চাও।
গল্পটা বলার কারণ এটা- কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস করে শিক্ষকরা নির্ভুল। তারা যা বলবে সেটাই সঠিক৷ এখন কোনো বিষয়ে শিক্ষার্থীদের যদি ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হয়, সেটা খুব নেতিবাচক প্রভাব ফেলে৷ একজন শিক্ষক সবকিছু জানবে না এটাই স্বাভাবিক।
তবে শিক্ষার্থীদের কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে অবশ্যই সেটা নির্দ্বিধায বলতে হবে। পরবর্তী ক্লাসে সঠিক ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জানাশোনা করতে হবে। এই চর্চাটা রাখা জরুরী।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জীবনের প্রথম ধাপেই থাকে৷ সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো তাদেরকে নৈতিকতা শিক্ষা দেয়া৷ এটা কাঠখোট্টাভাবে উপস্থাপন না করে, গল্পের মাধ্যমে বলা যেতে পারে৷ একটা মজার গল্প বলে শিক্ষার্থীদের কাছে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে তারা গল্পটা থেকে কী শিখলো।
তাহলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই ভেবে চিন্তে শিক্ষনীয় বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করবে। ক্লাসটা মজার হলো, শিক্ষার্থীরাও আনন্দের মাধ্যমে জ্ঞান লাভ করলো।
একজন শিক্ষক যদি আন্তরিক হয়, তাহলে তিনি বিপ্লব ঘটিয়ে দিতে পারেন। দক্ষ জনশক্তি গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
পরিশেষে বলতে হয়, প্রাথমিক পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত গাইড দেয়া, ইতিবাচকভাবে বদলে দেয়া, সর্বোপরি সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষকেরই।
লেখক –
নিবেদিতা শিকদার
সহকারী শিক্ষক
দিঘলিয়া, খুলনা।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.