সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজি রিডিং পড়তে পারছে। গত বছর বিশ্বব্যাংক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, বর্তমানে তার চিত্র উল্টে গেছে বলে দাবি করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন।
মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে মীনা দিবস- ২০১৯ উদযাপন অনুষ্ঠানে সচিব এ কথা বলেন। এ বছর মীনা দিবসের স্লোগান ‘মনের মত স্কুল পেলে শিখব মোরা হেসে খেলে’। ‘মান সম্মত শিক্ষাকে’ থিম হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।
আকরাম হোসেন বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা আনন্দ পায় না। বিদ্যালয়গুলোতে সেই আলোকে তৈরি করা হয়নি বলে অনেক শিশুরা স্কুলেও যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো দৃষ্টিনন্দন করে তোলার কাজ শুরু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই দেশের বিদ্যালয়গুলো দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হবে। প্রথমে ঢাকা মহানগরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর পরিবর্তন আনা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব বিদ্যালয় শিশুদের উপযোগী করে তোলা হবে।
সচিব বলেন, প্রাথমিকের ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে রিডিং পড়তে পারে না বলে গত বছর বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। গত এক বছরের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তার সুফল হিসেবে বর্তমানে সেই প্রতিবেদন চিত্র উল্টে গেছে। এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে রিডিং পড়তে পারছে বলে দাবি করেন তিনি।
সচিব আরও বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী মীনা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। মীনা একটি কার্টুন চরিত্র, এর মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি, কন্যা শিশুদের প্রতি বৈষম্য, অবিচার, পুষ্টিহীনতা, শিক্ষা ও কর্ম তুলে ধরা হয়েছে। মীনা চরিত্রর মাধ্যমে সবাইকে সচেতন ও মানসিকতার পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তা দেখানো হয়েছে। বর্তমানে ছেলেদের চাইতে প্রায় সব স্থানে মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মনজুর কাদির বলেন, মীনা কার্টুনের মাধ্যমে সমাজিক সচেনতার ও কন্যা শিশুদের প্রতি বৈষম্য কমে গেছে। বর্তমানে নারীরা অনেক এগিয়ে এসেছে। এখনো যেসব স্থানে এমন বৈষম্য রয়েছে তা দূরীকরণের আহ্বান জানান তিনি।
এবার মীনা দিবস উদযাপন উপলক্ষে জেলা/উপজেলা পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে র্যালি, মীনা বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, যেমন খুশি তেমন সাজো ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
মীনা বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র। এটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল তথা দক্ষিণ এশিয়ার মেয়ে শিশুদের প্রতিনিধিত্বকারী কন্যাশিশু চরিত্র।
এ বছর জাতীয় পর্যায়ে মীনা কার্টুন প্রদর্শনী, উপস্থিত শিশুদের অংশগ্রহণে মীনা বিষয়ক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক আয়োজন, পাপেট শো ও মাপেট শো প্রদর্শনী এবং মীনা মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় ১৫টি স্টল সাজানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমদ, বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রমুখ।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.