নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে অধিদপ্তরের নতুন নির্দেশনা
ঢাকাঃ দেশের ৯ সহস্রাধিক বেসরকারি মাদরাসায় শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে কোনো পরীক্ষার্থীর নিকটাত্মীয় নিয়োগ কমিটিতে থাকতে পারবেন না। স্বচ্ছ নিয়োগের লক্ষ্যে গত ৬ জুন এমন নির্দেশনা জারি করেছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। এ ছাড়া মাদরাসার উপাধ্যক্ষ, সহকারী সুপার, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, ভারপ্রাপ্ত সুপার ও শিক্ষক-কর্মচারী ওই মাদরাসার কোনো পদে প্রার্থী হলে তিনি নিয়োগ কমিটিতে থাকতে পারবেন না।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়োগপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি মাদরাসায় শিক্ষক নিয়োগ দেয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এর বাইরে কিছু পদে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি। যেমন—অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির, ফকিহ, আদিব, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, হিসাব সহকারী, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, ল্যাব সহকারী, নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নৈশ প্রহরী ও আয়া।
ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্তির অনলাইন আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন যাচাই-বাছাই, নিয়োগ কমিটি গঠন, পরীক্ষার নম্বর বণ্টন, পরীক্ষার সময়, মূল্যায়ন, ফলাফল বিবরণী ও সুপারিশের ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে।ফলে তাঁদের এমপিওভুক্তিতে জটিলতা হচ্ছে।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, অধিদপ্তর থেকে প্রতিনিধি হয়ে যাঁরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটিতে সদস্য হবেন, মূলত তাঁদের জন্য এই নির্দেশনা। নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যেন একই নীতিমালা অনুসরণ করা হয় সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেখা যায়, যে পদে নিয়োগের সুযোগ নেই বা পদটি শূন্য ধরা যায় না, সেখানেও অনেক সময় নিয়োগ দেওয়া হয়।
নির্দেশনায় ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ কমিটি গঠন করা হলে তাতে মাদরাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের একজন প্রতিনিধি রাখার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। এ জন্য মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে প্রতিনিধি চেয়ে আবেদন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানভেদে কমিটিতে একজন করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বা শিক্ষক প্রতিনিধি এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য থাকবেন।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, মাদরাসায় নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি না থাকলে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। প্রাপ্যতাবিহীন পদে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করা হলে তাঁদের বেতন-ভাতার শতভাগ প্রতিষ্ঠান থেকে দিতে হবে।
এসব শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তির আবেদন করলে প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও কমিটির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়া
দুটি জাতীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাতে প্রতিটি পদের জন্য আবেদন যোগ্যতা, বেতন-ভাতাসহ আবেদনের তারিখ নির্ধারণ করে নন-এমপিও পদ উল্লেখ করতে হবে। ম্যানেজিং কমিটির রেগুলেশনের মাধ্যমে গঠন করতে হবে তিন সদস্যের যাচাই-বাছাই কমিটি। প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই শেষে বৈধ প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করবেন কমিটির সদস্যরা। নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে ছুটির দিনে। সংশ্লিষ্ট মাদরাসার পরিবর্তে অন্য কোথাও নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র নির্বাচন করতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। নিয়োগের সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
নির্দেশনায় পদভিত্তিক নিয়োগ পরীক্ষার নম্বর বণ্টন ও পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। পদভেদে পরীক্ষাগুলো ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের হবে। সনদের জন্য নম্বর বণ্টনসহ লিখিত, মৌখিক পরীক্ষাসহ মোট নম্বর ৫০ নির্ধারণ করতে হবে। প্রতিটি পদের বিপরীতে অন্তত তিনজন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৭/০৬/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়