একই এলাকার সর্বত্র বৃষ্টি না হওয়ার কারণ কী?
ঢাকাঃ আকাশে যখন তীব্র বজ্রমেঘ তৈরি হয়ে যায়, তার গঠন থাকে ত্রিমাত্রিক। ঢাকার সব জায়গায় বৃষ্টি না হওয়ার সাথে ঢাকা শহরের আয়তন ও বজ্রমেঘের এই ত্রিমাত্রিক গঠন সম্পর্কিত।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, একটি তীব্র বজ্রমেঘের দৈর্ঘ্য সাধারণত ২২ থেকে ২৪ কিলোমিটারব্যাপী হতে পারে। এর চওড়া বা প্রস্থ হতে পারে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এছাড়া, মাঝারি বা ছোট বজ্রঝড়ের উচ্চতা হয় আট থেকে ১২ কিলোমিটার। বড় বজ্রঝড়ের উচ্চতা ১৮ থেকে ২২ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ, বজ্রমেঘের ত্রিমাত্রিক গঠন থাকে। রকম একটি ত্রিমাত্রিক শক্তিশালী বজ্রঝড় অগ্রসর হওয়ার সময় তার আয়তন কম বেশি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আয়তন ১৭৮ বর্গ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে, শহরের দক্ষিণ থেকে উত্তর পর্যন্ত দূরত্ব আনুমানিক ২২ কিলোমিটার এবং পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। অর্থাৎ, ঢাকা একটি লম্বা শহর। সুতরাং, ঢাকার ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মাঝ দিয়ে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার চওড়া হয়ে একটি বজ্রঝড় যখন যায়, তখন সে শহরের সবটুকু দৈর্ঘ্যকে কাভার করে না।’
এই আবহাওয়াবিদ বলেন, সাধারণত বজ্রঝড়ের গতিবেগ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে, অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে হয়। এর মানে, বড় লম্বা একটা জায়গার মাঝ দিয়ে কম চওড়া একটি জিনিস যাচ্ছে। বজ্রঝড়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো- এটি সরল পথে না, আঁকাবাঁকা পথে চলে।
তিনি বলেন, যেহেতু সে জিগজ্যাগ বা স্পাইরাল মুভমেন্ট করে এবং শহরের মাঝে অনেক স্থাপনা থাকার কারণে বা পাহাড় থাকলে বাতাস বিভিন্ন জায়গায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দিক পরিবর্তন করে; তাই, বজ্রঝড় অগ্রসর হওয়ার সময় সে কোনও এলাকাকেই পূর্ণরূপে কভার করতে পারে না। সেই কারণে, কোথাও কোথাও তাণ্ডব কম হয়, কোথাও বেশি হয়। কোথাও বৃষ্টিপাত বেশি, কোথাও বৃষ্টিপাত হয় না। ভূমিরূপ বা টপোগ্রাফি অব দ্য আর্থ সারফেস এখানে গুরুত্বপূর্ণ। সূত্র: বিবিসি বাংলা
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৪/০৫/২০২৪