মোয়াজ্জেম হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি ।।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বালিয়াতলী ইউনিয়নে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর মুখে চুমু দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ মোহাম্মদ ইছার বিচার দাবি করে কাংকুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে।
মঙ্গলবার শেষ বিকেলে কুয়াকাটা বিকল্প সড়কের চৌরাস্তায় স্কুল সংলগ্ন এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে বিক্ষুব্ধরা প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।বর্তমানে এনিয়ে এলাকায় চলছে তোলপাড় ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক সোমবার তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে অফিস রুমে ডেকে নিয়ে স্কুলে না আসার কথা জিজ্ঞেস করে এক পর্যায় শরীরে হাত দেয় ও মুখে চুমু দেয়। প্রথমে ওই ছাত্রী তার এক বোনকে বিষয়টি বলে। ওই বোন শিশুর বাবা মোস্তফা হাওলাদারকে খবর দেয়। স্কুলে পৌছে শিশুর কাছ থেকে সব শুনে বিষয়টি নিয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ এনামুল হককে বলেন। তিনি জানান, প্রধান শিক্ষককে ডেকে তিনি জিজ্ঞেস করলে পা ধরে ক্ষমা চায়। এমনকি শিশুর বাবা শ্রমজীবী মোস্তফা হাওলাদারের পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চান প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইছা।
মোস্তফা হাওলাদার বলেন, ‘তারাও (শিক্ষকরা) মোগো সন্তানের বাপের মতো। ও (মেয়ে) দুই দিন স্কুলে যায়নি। একারণে রুমে একা ডাইক্কা মুখে চুমা দেয়’।
ঘটনার তদন্তে কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাশার মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাস্থলে তদন্ত করেছেন। লিখিত অভিযোগ নিয়েছেন। তিনি তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। তিনি কথা শুনেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ সদস্যদের সঙ্গে।
একাধিক শিশু শিক্ষার্থী জানায় ওই শিক্ষার্থীর মুখে চুমু দেয়ার পরে মুখ ধোয়ার জন্য অনুরোধসহ কাউকে ওই কথা না বলতে ক্লাশে ফার্স্ট বানানোর প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই প্রধান শিক্ষকের অপসারনসহ বিচার দাবি করেন অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা। পঞ্চম শ্রেণির একাধিক ছাত্রী জানায়, হুজুর (হেড) স্যারের কথা না শোনলে পিটায়, মারধর করে। তার বদলে ছাত্রীরা একজন মহিলা শিক্ষক পদায়ন চেয়েছেন।
অভিভাবক রীণা বেগম জানান, তার মেয়ে ক্লাশ থ্রিতে পড়ে। তিনিও ওই শিক্ষককে নিয়ে চিন্তিত। মঙ্গলবার বিকেলে স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মাওলানা আবু সালেহকে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি একটি আবেদন (সই ছাড়া) সহকারী শিক্ষকদের কাছে রেখে গেছেন। যেখানে শারীরিক অসুস্থতার কথা বলেছেন। জঘন্য এ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য মোটা অংকের টাকার বাজেট রাখার কথা বলছেন স্থানীয়রা। সকলকে ম্যানেজ করে মূল বিষয় ধামাচাপা দিতে এমন টার্গেট নেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ মোহাম্মদ ইছা এসব অস্বীকার করে বলেন, এটি ষড়যন্ত্র। কারা ষড়যন্ত্র করছে তা বলেননি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল বাশার জানান, তিনি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) অনুপ দাশ জানান, মাত্র মাসখানেক আগে যৌনহয়রাণির অভিযোগে কলাপাড়ার একজন প্রধান শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার পরে ফের এমন ন্যাক্কারজনক অভিযোগ ওঠায় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছেন।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.