আজ বুধবার রাতেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যর কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হতে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সাংগঠনিক প্রধান তারেক রহমান ছাত্রদলের কাউন্সিলরদের মতামত নিয়েই এই কমিটি গঠন করবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, পাঁচ সদস্যর কমিটির সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বা সাংগঠনিক সম্পাদক চূড়ান্ত করে ফেলেছেন দলটির হাইকমান্ড। তবে এখন পর্যন্ত সভাপতির পদে কে আসছেন তা চূড়ান্ত হয়নি।
জানা গেছেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান আমিন হতে যাচ্ছেন। সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শাহ নেওয়াজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলও আলোচনায় আছেন। লন্ডনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে যেসব প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন কমবেশি সবাই কেন্দ্রীয় কমিটির পদ পাবেন বলে জানা গেছে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আমিনুর রহমান আমিন বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্তির পথ সুগম করতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন। কাউন্সিলর বা আগামীর রাষ্ট্রনায়ক দায়িত্ব দিলে জীবন দিয়ে সেই দায়িত্ব পালন করবো।’
তিনি জানিয়েছেন, ‘কারাগারে বন্দী মায়ের মুক্তির জন্য মুলত ভোটে লড়ছি আমি। কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার পর সাধারণ সম্পাদক হিসাবে একমাত্র আমিই মায়ের মুক্তির লক্ষ্যে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে মিছিল করেছি। আমার মুল লক্ষ্য কারাগার থেকে মাকে মুক্ত করা এবং আগামীর রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে সরকারের বাধ্য করা।’
কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে বলবো, ‘আমাকে নয়, আমাদের মাকে মুক্ত করার জন্য একটিবার সুযোগ দিন আমাকে। আমি কথা দিচ্ছি মায়ের জন্য সন্তান হিসাবে জীবনবাজি রেখে রাজপথে থাকবো। আমি আশা করছি কাউন্সিলররা যথেষ্ট বিজ্ঞ এবং বিচক্ষণ, তারা যোগ্য নেতা চিনতে ভুল করবেন না। কখনো নেতা হিসাবে নয়, কর্মী হিসাবে সার্বক্ষণিক আপনাদের পাশে থাকবো।’
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলে আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে বন্ধ রয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সাবেক ছাত্রনেতাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সাংগঠনিক প্রধান হিসেবে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দিয়েছেন কাউন্সিলররা। এই বাস্তবতায় আজ বিকালে নয়া পল্টনের পার্টি অফিসে ডাকা হয়েছে। সেখানে কাউন্সিলরদের মতামত নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।
এবার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ২৮জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সভাপতি হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ৯জন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ১৯জন। বিভিন্ন জরিপে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসাবে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন আমিনুর রহমান আমিন।
২০০১ সালে এসএসসি ও ২০০৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর নিজ যোগ্যতায় ছাত্রদলের রাজনীতির মাঠ কাঁপান তিনি। বিগত ১/১১ এর সময়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অগ্রভাগের সৈনিক ছিলেন তিনি। পারিবারিক সূত্রে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আমিন ছোটবেলা থেকে ছাত্রদলের রাজনীতি নেতৃত্ব দেয়ার স্বপ্ন দেখতেন।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের এই ছাত্রনেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হলে থাকতেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিমধ্যে দেশব্যাপী বিভিন্ন ইউনিটের সফর শেষ করেছেন আমিন।
খুলনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা তুহিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী মহিদুল ইসলাম জানান, ‘সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তার মধ্যে যোগ্য আমিনুর রহমান আমিন। আশা করছি হাইকমান্ড এবং অন্য কাউন্সিলরা আমিনকে নেতা বানাতে ভুল করবেন না।’
সাতক্ষীরা জেলার সভাপতি শেখ শরীফুজ্জামান সজীব, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনজিল মোর্শেদ মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রায়হান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মির্জা রনি বলেন, ‘ছাত্র নেতা হিসাবে আমিনুর রহমান আমিনদের মতো নেতার দরকার। আমিন সাধারণ সম্পাদক হলে দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলন ত্বরান্বিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।’
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.