কয়েক হাজার সরকারি কর্মচারী চাকরি হারাতে পারেন। প্রথম থেকে ৪র্থ শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন এ তালিকায়। আপাতত এ সংখ্যা কমবেশি ২ হাজার ৫০০ হতে পারে। যেকোনো সময় তারা পৃথকভাবে চাকরিচ্যুত হতে পারেন। হুমকির মধ্যে থাকা চাকরিজীবীরা মূলত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, যে সনদ তারা জমা দিয়েছেন তা প্রশ্নবিদ্ধ বা সঠিক নয়।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ইতিমধ্যে প্রায় ৩০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ চিহ্নিত করে তা বাতিলের জন্য পর্যায়ক্রমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছে বলে জানা গেছে।
গত বুধবার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার সুপারিশ অনুযায়ী ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ বাতিল করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে কয়েকজনের সন্তান বা নাতি-নাতনি সরকারি চাকরিতে রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু হওয়ার পর বিসিএস প্রথম শ্রেণি, নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে প্রায় সব শ্রেণির পদে কমবেশি ৬ হাজারের অধিক এ কোটায় চাকরি পেয়েছেন, যারা এখন কর্মরত। এরমধ্যে যাচাই-বাছাই করে দেখা যাচ্ছে আড়াই হাজারের মতো সনদ প্রশ্নবিদ্ধ। শেষ পর্যন্ত সনদ মিথ্যা প্রমাণিত হলে তা বাতিল হবে। আর এ কোটায় যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরিও যাবে। অবশ্য চাকরিচ্যুত করার ক্ষেত্রে বেশকিছু আইনি জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের পর সেক্টর কমান্ডার ও সাবসেক্টর কমান্ডারদের প্রকাশনা থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধে নিয়মিত বাহিনীর সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ৮০০ এবং অনিয়মিত বাহিনীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭ হাজার। অর্থাৎ মোট ১ লাখ ৩১ হাজার ৮০০ জন। সেক্টর থেকে পাওয়া (মুক্তিযুদ্ধকালীন সেক্টর বিলুপ্তির পর এসব দলিল ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রশিক্ষণ ও রেকর্ড সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠান ইবিআরসিতে স্থানান্তর করা হয়েছে) দলিলে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৭০ হাজার ৮৯৬ জন। বাকি ৬০ হাজার ৯০৪ জনের খোঁজ পাওয়া যায় নাই।
এদিকে ১৯৯৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা লাল বইয়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধার নাম রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্র জানায়, ইবিআরসিতে সংরক্ষিত ৭০ হাজার ৮৯৬ জনের মধ্যে অনেকের নাম এ তালিকায় নেই। অর্থাৎ এ তালিকাটিও অসম্পূর্ণ বলা যায়।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় গেরিলা ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তালিকায় ও লাল মুক্তিবার্তায় অন্তর্ভুক্ত না থাকলে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন না মর্মে সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেছে। এ দুটি শর্তকে প্রাধান্য দিয়ে জামুকা এখন যাচাই-বাছাই করছে।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.