শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ জানেন না শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘ডক্টর’ না ‘ডাক্তার’। রোববার একটি সভার সংশোধিত নোটিশে শিক্ষামন্ত্রীর নাম ‘ড. দীপু মনি’ লিখেছেন তিনি। এমনকি নোটিশে বাক্যের গঠনও ঠিক রাখতে পারেননি এ কর্মকর্তা। একটি ‘সংশোধিত’ নোটিশে সরকারি কর্মকর্তার এমন ভুল সমালোচিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
জানা গেছে, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য তৈরি করা খসড়া কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে সোমবার এক সভার আয়োজন করা হয়। পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী সভাটি দুপুর দেড়টায় শুরু হবার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দুপুর দুইটায় করা হয়। বিষয়টি জানিয়ে ‘সংশোধিত’ নোটিশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ স্বাক্ষরিত ‘সংশোধিত’ নোটিশে বলা হয়, ‘‘নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮ অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য প্রণীত খসড়া কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে আগামী ২৬ আগস্ট ২০১৯ তারিখ সোমবার আয়োজিতব্য সভাটি দুপুর ০১:৩০ টার পরিবর্তে ০২.০০টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী ড. দীপু মনি এম.পি.-এর সভাপতিত্বে আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা ইনিস্টিটিউট, ঢাকা’র সম্মেলন কক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হবে।’
দুর্ভাগ্যজনকভাবে উপসচিব মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ ‘সংশোধিত’ নোটিশে বাক্যের গঠন ঠিক রাখতে পারেননি। তিনি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নাম লিখেছেন ড. দীপু মনি। ভুলে ভরা এ সংশোধিত নোটিশটি পাঠানো হয়েছে শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ৩৭ জন কর্মকর্তাকে। নোটিশটির সমালোচনা করেছেন সংশ্লিষ্টদের অনেকেই।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা একজন এমবিবিএস ডাক্তার। এছাড়াও তিনি লন্ডনে আইন ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ এর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নীতিমালাটির বিস্তরণ এবং মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও জোরদারকরণের জন্য সভা ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আনোয়ারুল হক সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী ড. দীপু মনির সভাপতিত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে (ভবন: ৬, কক্ষ নং ১৮১৫) সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সংশ্লিষ্ট সকলকে উপস্থিত থাকার জন্যে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ২০১২ সালে নীতিমালা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়নি। সাড়ে ৬ বছর পর গত ২৪ জানুয়ারি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালার বাস্তবায়ন মনিটরিংয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে একটি, জেলা পর্যায়ে একটি ও উপজেলা পর্যায়ে একটি মোট তিনিটি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছিল। আগামী সোমবার অনুষ্ঠিতব্য সভায় এসব কমিটির কার্যকারিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয় সূত্র।
সূত্র জানায়, সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী সহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহবার হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিবের প্রতিনিধি, সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের প্রতিনিধি, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গেলাম ফারুক, ঢাকার ডিসি,কারিগরি ও মাদরাসাসহ সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালকসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালাটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কয়েকজন শিক্ষক গত বছর পৃথক তিনটি রিট মামলা করেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের করা নীতিমালা বৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। নীতিমালায় সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদরাসার কোনো শিক্ষক তার নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে বা প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না বলা রয়েছে।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
শিক্ষাবার্তা ডট কম অনলাইন নিউজ পোর্টাল
