এইমাত্র পাওয়া

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ বিকেল ৪টায়

ঢাকাঃ বাড়িভাড়া ভাতা ২০ শতাংশ বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ করবেন তারা।

এদিন দুপুর দেড়টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হয়।

এর আগে, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি আজ দুপুর ১২টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা শিক্ষা উপদেষ্টার ‘আলোচনার প্রস্তাব’ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে তারা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর অনুরোধে আজ বিকেল চারটা পর্যন্ত সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পিছিয়েছেন। তারা বিকেল চারটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে তারা সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি করবেন।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, আজ সকালে শিক্ষা উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে তারা আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। সচিবালয় অভিমুখে আজ লংমার্চ করার বিষয়ে অনড় আছেন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনকারী ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টার পক্ষ থেকে দেওয়া আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি আমরা। আমাদের একটাই দাবি, প্রজ্ঞাপন দিতে হবে। কোনো আলোচনার আর সুযোগ নেই।’

দুপুর পৌনে ১২টায় পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলমসহ একটি দল শহীদ মিনারে আসে। তারা শিক্ষকদের লংমার্চ পেছানোর জন্য অনুরোধ করে। এ সময় শিক্ষকনেতা দেলোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একটি কল আসে। পরে তিনি বলেন, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ তাকে কল করে লংমার্চ কর্মসূচি পেছাতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

দেলাওয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রশাসন জানিয়েছে, তারা দাবি মেনে নেবে। তবে প্রজ্ঞাপন জারি হতে কিছুটা সময় লাগবে। আমরা যাতে লংমার্চ কর্মসূচি পালন না করি। বিষয়টি নিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহও আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তবে আমরা জানিয়েছি, প্রজ্ঞাপন ছাড়া লংমার্চ প্রত্যাহারের সুযোগ নেই।’

এই শিক্ষকনেতা আরও বলেন, তারা প্রশাসনকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এর মধ্যে দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে তারা সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পালন করবেন।

এদিকে আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী অবস্থান করছেন। আন্দোলনকারীদের তিনটি দাবি হলো- মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম তিন হাজার টাকা) বাড়িভাড়া। শিক্ষক ও কর্মচারী উভয়ের জন্য চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা করা। কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে খুলনা থেকে আসা সুদাস চন্দ্র দাস নামের এক কলেজশিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষকেরা ন্যায়ের পথে চলেন। তারা শ্রম দেন সৎ পথে। কিন্তু সে অনুযায়ী তাদের যে পারিশ্রমিক, তা দিয়ে সংসার চলে না। পেটে খিদে থাকলে পাঠদান হবে কেমন করে? তাই সরকারের উচিত, শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া।’

এর আগে, রোববার ও সোমবার রাতভর রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেন শিক্ষকরা। কেউ প্লাস্টিকের চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার মাথার নিচে দিয়ে রাত কাটান। তাদের দাবি, প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলবে।

অন্যদিকে, সারাদেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বর্তমানে কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছেন। তারা প্রতিদিন নিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও কোনো শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছেন না, পাঠদান কার্যক্রমেও অংশ নিচ্ছেন না। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা, শিক্ষক লাউঞ্জ কিংবা অফিসকক্ষে বসেই তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়া বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকরা হাতে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়েও প্রতিবাদ করছেন। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ঢাকায় অবস্থানরত আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অসংখ্য পোস্ট দিচ্ছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষকরা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৪/১০/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading