গোপালগঞ্জঃ গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া সুলতানা মুক্তাকে পদোন্নতি দিয়ে সহযোগী অধ্যাপক কারায় তা প্রত্যাখান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তাদের দাবি, জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বিরোধিতা করেছিলেন এই সহকারী অধ্যাপক। ফলে তিন দফা দাবি দিয়ে তার পদোন্নতির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা দাবি জানান তারা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি এক অফিস আদেশে দেখা গেছে, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিক্ষক জাকিয়া সুলতানা মুক্তাকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অথচ এই শিক্ষক কিছু মাস আগেই স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হুমকি, তাচ্ছিল্য ও হীন আচরণে লিপ্ত হয়েছিলেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘যে শিক্ষক ছাত্রস্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, যিনি শিক্ষাঙ্গণকে রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়েছেন তাকে পুরস্কৃত করা মানে জাতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে, নৈতিকতার সঙ্গে এবং ছাত্রসমাজের সঙ্গে নির্মম তামাশা করা। এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং নবগঠিত রিজেন্ট বোর্ড যেন সরাসরি ফ্যাসিস্ট রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এই পদোন্নতির সিদ্ধান্ত ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’
বিজ্ঞপ্তিতে তিনটি দাবির বিষয়ে বলা হয়, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই, (১) অবিলম্বে এই প্রমোশন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে (২) ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া জাকিয়া সুলতানার আচরণ তদন্তের আওতায় আনতে হবে (৩) বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছ, ন্যায় ও নিরপেক্ষভাবে পদোন্নতি প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস নয়, এটি মুক্ত চিন্তা, প্রশ্ন করার অধিকার ও ছাত্রদের নিরাপদ পরিবেশের স্থান।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, ‘বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিক্ষক জাকিয়া সুলতানা মুক্তার পদোন্নতির বিষয়টি আরও এক বছর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু রিজেন্ট বোর্ড না থাকায় তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। এবার রিজেন্ট বোর্ড হওয়ায় আগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে এ সব বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে, কীভাবে তারা পদোন্নতি পেয়েছে। আইনসিদ্ধভাবে পদোন্নতি না পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত করে কোনো শিক্ষক দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৪/০৭/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.