কুমিল্লাঃ কুমিল্লার চান্দিনায় নিজ বিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী ছাত্রীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ উঠেছে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ভূক্তভোগী এক ছাত্রী ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
চান্দিনা উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের ধেরেরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৫ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বিদায় নেয়া এক ছাত্রী রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে ওই অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী জানায়- আমাদের বিদ্যালয়ের (ধেরেরা উচ্চ বিদ্যালয়) সিনিয়র শিক্ষক তরিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের প্রতি অনৈতিক আচরণ করে আসছেন। তিনি তার বাড়িতে প্রাইভেট পড়ানোর সময় বিভিন্ন অজুহাতে ছাত্রীদের স্পর্শ করেন, কু-ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন এবং শারীরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেন। আমার সাথেও তিনি একই ধরনের আচরণ করেছেন। যার ভিডিও ফুটেজসহ বিভিন্ন ম্যাসেজ এর স্ক্রীণসর্ট আছে।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়- শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ধেরেরা গ্রামের বাসিন্দা এবং অভিযোগকারী শিক্ষার্থীও একই গ্রামের বাসিন্দা। ৯ম শ্রেণীতে অধ্যয়ণরত অবস্থায় প্রবাসীর সাথে বিবাহ হয় ওই ছাত্রীর। ২০২৫ সালে এসএসসি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ওই বিদ্যালয় থেকে বিদায় নেয়। ওই শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পরানোর সময় নানা ভাবে ইঙ্গিত দিয়ে দিন ও রাতের বিভিন্ন সময় ফোনে কথা বলা ও ম্যাসেজ করতেন ওই শিক্ষক। ওই ধারাবাহিকতায় পবিত্র ঈদ-উল আজহার দুইদিন পূর্বে রাতের বেলা ওই শিক্ষার্থীর সাথে ভিডিও কলে কথা বলেন শিক্ষক তরিকুল। ওই সময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বন্ধুত্বের মতো নানা ভাবে কথা বলেন এবং শিক্ষার্থী শিক্ষকের মুখ থেকে কথা বের করে আনতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বণ করে অন্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। ওই শিক্ষার্থী তার ধারণ করা ভিডিও বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছেও দেন।
ছাত্রীদের সাথে রাতে একান্তভাবে ভিডিও কলে কথা বলা এবং কুপ্রস্তাব দেয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে সৃষ্টি করছেন এলাকার কতিপয় লোকজন।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষক তরিকুল ইসলাম জানান- বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। ওই ছাত্রী আমাকে ফোন দেয় এবং নিজেই বিভিন্ন ভাবে আমার সাথে কথা বলে আমার কাছ থেকে আপত্তিকর কথা বের করার চেষ্টা করে। তারা সম্পূর্ণ ভিডিও প্রকাশ না করে এডিটের মাধ্যমে খন্ডিত ভিডিও প্রচার করে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুল জামান বলেন- আমি ২০২১ সালে ওই বিদ্যালয়ের যোগদানের পর শিক্ষক তরিকুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে হেনস্থা করার অভিযোগ শুনেছি। এবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ভাবে বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান- শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্তের জন্য কমিটি করে দিচ্ছি, প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করার পর বিস্তারিত বলা যাবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৭/০৬/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.