বরিশালঃ উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সোমবার থেকে পাঠদান বন্ধসহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ জন্য শিক্ষার্থীরা রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের শিক্ষকদের কাছে চিঠিও দিয়েছেন বলে ইতিহাস বিভাগের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন জানান।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগের চেয়ারম্যানসহ সব শিক্ষকের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছি। উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।“
মোশারফ হোসেন আরো বলেন, “শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা দিলেও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা, পরিবহন সেবা, লাইব্রেরি ও মেডিকেলসহ অন্য জরুরি সেবা এর আওতামুক্ত থাকবে।”
শিক্ষকদের প্রতি আন্দোলনকারীদের খোলা চিঠিতে বলা হয়, “শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় গত ২৬ দিন ধরে চলমান আন্দোলন সবিশেষ ১ (এক) দফা তথা এই অপেশাদার, মামলাবাজ, অযোগ্য উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে উপনীত হয়েছে। এ দাবি আদায়ে আমরা শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ ও আপোষহীন।”
“ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বনির্ধারিত চলমান সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা ছাড়া সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাটডাউন ঘোষণা করা হল।
“সরকার আমাদের দাবির প্রতি এখন পর্যন্ত কর্ণপাত করেনি। দীর্ঘদিন আন্দোলনের কারণে আমাদের আর পেছনে ফিরে যাওয়ার নূন্যতম জায়গা নেই। দাবি আদায়ের এই আপোষহীন লড়াইয়ে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে আমরা ১২ মে, ২০২৫ তারিখ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক শাটডাউন ঘোষণা করেছি।”
চিঠিতে আরও বলা হয়, “আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শিগগিরই এই বাকরুদ্ধ পরিবেশ থেকে মুক্তি পেয়ে সৃজনশীল গতিময় একাডেমিক জীবনে ফেরত যাব বলে আশাবাদী। ততক্ষণ আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে ঘোষিত কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে আপনাদের পূর্বনির্ধারিত সকল একাডেমিক ক্লাস বন্ধ রাখার সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।
“আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একযুগ ধরে অবকাঠামো উন্নয়নে বঞ্চিত দক্ষিণবঙ্গের এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এবার যেকোনো মূল্যে সরকারের অগ্রাধিকার পরিকল্পনায় রাখতে চায়। এজন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্মিলিত আপোষহীন প্রচেষ্টাই পারবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের স্থবিরতা কাটিয়ে তুলতে।সেজন্য আমাদের রাজপথের অসম লড়াইয়ে আপনাদের (শিক্ষকদের) সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।”
“আমরা আশা করছি, শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা চিন্তা করে আপনারা এই দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের ফ্যাসিবাদী প্রশাসনের সব লোভনীয় পদ থেকে অতিশীঘ্র পদত্যাগ করবেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. মহসিন উদ্দিন বলেন, “আমি দেখিনি, তবে শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠির বিষয়টি অন্যদের কাছ থেকে শুনেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, “চলমান এক দফা দাবিতে আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত ১৮টি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা বিবৃতির মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করেছেন। যেটি জোরালো জনমত হিসেবে কাজ করছে। সব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শিক্ষকদের বিষয়টি অবহিত করেছি, যেন শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তারাও ক্লাস বর্জন করেন।”
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৫/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.