ঢাকাঃ শিক্ষাখাতে বিভিন্ন সংস্কারসহ ১১ দফা দাবি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ নামের একটি সংগঠন। একই সঙ্গে দাবি আদায়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা।
রোববার (১৬ মার্চ) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ কলেজ উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী শাহ মো. আলী আব্বাস ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ হলো
১. শিক্ষাখাতে ব্যয়ের জন্য জিডিপি অনুসারে কমপক্ষে ৬ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে। সেই সঙ্গে এই বরাদ্দের ব্যয়ের সম্পূর্ণ হিসাব জনগণের সামনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। (ইউনেস্কোর পরামর্শ, একটি দেশের জিডিপির কমপক্ষে ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করা উচিত। অথচ, বাংলাদেশের জিডিপির মাত্র ১.৬৯ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়, যা প্রতি বছর কমেই যাচ্ছে।
২. প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত সব রাষ্ট্র থেকে বিনামূল্যে দিতে হবে। শিক্ষার বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ, সংকোচন ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে। টাকা যার শিক্ষা তার এই চিন্তা চেতনার বিলুপ্তি করতে হবে।
৩. শিক্ষা কারিকুলাম থেকে Unseen (অদেখা প্যাসেজ) বিভাগের বিলুপ্তি ঘোষণা করতে হবে।
৪. শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে হবে সেই সঙ্গে শিক্ষকদের সর্বোচ্চ বেতন কাঠামো প্রণয়ন, যথাযথ সামাজিক মর্যাদা প্রদান এবং শিক্ষকদের দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
৫. অবিলম্বে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে এবং এতে শিক্ষার্থীদের এবং অভিভাবকদের সর্বাধিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা কারিকুলাম হবে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত, অযৌক্তিকভাবে ঘন ঘন পরিবর্তন করা যাবে না।
৬. পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের কারিগরি ও আধুনিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণের (ফ্রিল্যান্সিং/স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ) মাধ্যমে, জনসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, যেন তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। এটির অন্যতম উদ্দেশ্য বেকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়া।
৭. জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম ২০২১ প্রণয়নকারী, শিক্ষা ধ্বংসের দোসর এবং শিক্ষা খাতের বরাদ্দের দুর্নীতি কারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
৮. প্রত্যেকটি বিভাগ ও শ্রেণির জন্য, সাধারণ বিজ্ঞান নামের একটি বই প্রণয়ন করতে হবে, যা শিক্ষাকারিকুলামে চতুর্থ বিষয় (ফোর্থ সাবজেক্ট বুক) হিসেবে বাধ্যতামূলক থাকিবে।
৯. সর্বজনীন সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে যা আত্মরক্ষার জন্য বিশেষায়িত।
১০. প্রত্যেকটি পাবলিক পরীক্ষায় পূর্বের ন্যায় কমপ্লিমেন্টাল পরীক্ষা পুনরায় চালু করতে হবে।
১১. শিক্ষক নিয়োগসহ সকল পরীক্ষায় ভাইভা/মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করতে হবে। কারণ এই ভাইভা পরীক্ষায়-অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে দুর্নীতি হয়। যা অযোগ্য ব্যক্তি নির্বাচনের সবচেয়ে বড় আখড়া।
শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি পূরণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করবেন তারা।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৬/০৩/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.