ঢাকাঃ ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় উসকানি দিয়ে একটি বিশেষ চক্র ঐক্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিনষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৪৬ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স সেলের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি সংগঠনটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং ধর্মীয় অবমাননার বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় অবস্থান। বাংলাদেশ দীর্ঘকাল ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে।
আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ সব ধর্মের মানুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহাবস্থানের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ আমাদের ঐতিহ্যের অংশ, যা জাতিগত ঐক্য ও শান্তির মূল ভিত্তি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিশেষ চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় উসকানি দিয়ে আমাদের ঐক্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে, ইসলাম ধর্ম, মহান আল্লাহ এবং রাসূল (সা.)-এর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য ও প্রচারণা আমাদের সামাজিক ঐক্যে আঘাত হানছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এমন কিছু বক্তব্য দেখা যাচ্ছে, যা ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিকে আঘাত করছে এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি করছে। দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে কেউ যদি ধর্মীয় অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান করে, তবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। এ ধরনের বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি, যে কোনো ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা শুধু ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিতেই আঘাত হানে না, বরং এটি সামগ্রিক সামাজিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
আমরা সমাজের সর্বস্তরের মানুষ— শিক্ষার্থী, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন বিভেদ সৃষ্টিকারীদের অপচেষ্টা প্রতিহত করেন এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কখনোই কারও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করার অধিকার দেয় না। প্রকৃত মুক্তচিন্তা ও গণতান্ত্রিক চর্চা তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা সামাজিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে সুসংহত করে।
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মের মানুষও শহীদ হয়েছেন। সেই আত্মত্যাগের চেতনায় উজ্জীবিত নতুন বাংলাদেশে সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
আমরা চাই, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি অব্যাহত থাকুক, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আরও দৃঢ় হোক এবং যেকোনো বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা ব্যর্থ হোক। আসুন, আমরা সকলে মিলে একটি শান্তিপূর্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সম্প্রীতিময় সমাজ গড়ে তুলি, যেখানে প্রত্যেক ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান থাকবে, আর আমাদের জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৩/০২/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.