এইমাত্র পাওয়া

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক বরখাস্ত, একজনের শাস্তি বাতিল

রাজশাহীঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত এবং এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তি বাতিল করা হয়েছে।

একইসঙ্গে বিনা অপরাধে সাজা ভোগ করার ঘটনায় কূটকৌশলে যুক্ত প্রমাণিত হওয়ায় একই বিভাগের তিনজন শিক্ষককে আগামী ৫ বছর পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো আলাদা দুইটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বরখাস্ত হওয়া দুই শিক্ষক হলেন ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অনীক কৃষ্ণ কর্মকার এবং আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম।

অন্যদিকে, অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তি বাতিল হওয়া শিক্ষক হলেন ফলিত গণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. শামসুল আলম সরকার।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অনীক কৃষ্ণ কর্মকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আনীত অভিযোগ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগের শিক্ষার্থীদের আনীত যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের অভিযোগসমূহ সম্পর্কে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ বিষয়ক অভিযোগ কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে পূর্বে গৃহীত সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, রিপোর্টে তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট, ১৯৭৩ এর ৫৫(৩) ধারার আওতায় হওয়ায় বিধি অনুযায়ী চার্জ গঠন ও চূড়ান্ত শাস্তি প্রদানের জন্য পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

অন্য আরেকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফলিত গণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. শামসুল আলম সরকারের প্রসঙ্গে ৪৬১তম সিন্ডিকেট সভার ১৩৭ নম্বর সিদ্ধান্ত বিষয়ে গঠিত রিভিউ কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটের ঐ সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

অধ্যাপক মো. শামসুল আলম সরকার কূটকৌশলের কারণে বিনা অপরাধে সাজা ভোগ করেছেন তা প্রমাণিত হওয়ায় একই বিভাগের শিক্ষক ড. আব্দুল হক, ড. আলী আকবর ও ড. আশরাফুজ্জামান খানকে আগামী ৫ বছর পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়েছে।

৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৫৩৬তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রফেসর মো. শামসুল আলম সরকার সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সিন্ডিকেট সভা তার প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১ অক্টোবর যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ ছাড়া, সিজিপিএ ৩ এর নিচে হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার অভিযোগ ওঠে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অনীক কৃষ্ণ কর্মকারের বিরুদ্ধে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অশিক্ষকসুলভ আচরণ, মানসিক হেনস্তা, অহেতুক হুমকি দেওয়া এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে।

এদিকে, গত ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থিসিস পেপার জালিয়াতি ও হাতে নকল নম্বর আনার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬১তম সিন্ডিকেটে ১৩৭ নম্বর সিদ্ধান্তে মাস্টার্সের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের মাধ্যমে রফিকুলের ছাত্রত্ব বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসন। একইসাথে অধ্যাপক মো. শামসুল আলম সরকারকে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজ থেকে আজীবন বিরত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৭/০২/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.