এইমাত্র পাওয়া

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবি

ঢাকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোসহ সারা দেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ)।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ‘গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস, ছাত্র রাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে’ সংগঠনটি আয়েজিত সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ এ দাবি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে গত ১৫ ও ১৬ জুলাই যে নৃশংস হামলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হয় তাতে শত শত শিক্ষার্থী আহত হন। সেই হামলার বিচারের বিষয়ে এখনও কোনও জোর তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে না। হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত অনেকেই বিভিন্নভাবে পুনর্বাসিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ডাকসুসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাকসু গঠনতন্ত্রেরও যৌক্তিক সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসু ও হল সংসদ গঠনতন্ত্র সংশোধনের বিষয়ে কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছে সংস্কার প্রস্তাব আহ্বান করে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ডাকসু ও হল সংসদের ভোটার, প্রার্থী ও সদস্যত্ব বিষয়ক ধারায় অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ও বয়সের মতো অযৌক্তিক শর্ত বাতিল করা এবং বিভিন্ন ধারায় সংসদের সভাপতির একচ্ছত্র হস্তক্ষেপের অগণতান্ত্রিক উপাদানগুলো বাতিলসহ বেশ কয়েকটি সংস্কার প্রস্তাব পেশ করা হয়। গঠনতন্ত্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও হল-ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণ ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের পূর্বশর্ত। আবার জুলাই আন্দোলনে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত এবং বিচার করা ছাড়াও ডাকসু নির্বাচনকে অর্থবহ করা কঠিন হবে।’

তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের পাঁয়তারার অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকটি হলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে হল প্রশাসনগুলি নোটিশ জারি করে। এরমধ্য দিয়ে হলগুলিতে শিক্ষার্থীদের কাছে রাজনৈতিক আদর্শিক বক্তব্য প্রচার-প্রচারণার পথকে রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতি এখনও বলবৎ রয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, ‘খুব সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গৃহীত যানবাহন ও জনসাধারণের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে। ক্যাম্পাস এলাকায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, যানবাহনের গতি মনিটরিং করা ছিল শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি। রাষ্ট্রের সার্বিক পরিকল্পনা ও আয়োজনের ঘাটতি-ত্রুটি আড়ালে রেখে সব ধরনের যানবাহন চলাচলের ওপর এবং জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার এই চটকদারি সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও জনগণকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।’ এ সময় অনতিবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

তাদের চার দফা দাবি হলো– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসহ সারা দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে; হল-ক্যাম্পাসে সব গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, রাজনৈতিক আদর্শিক বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশের অবাধ পরিবেশ তৈরি করতে হবে; গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নির্মাণ করে ডাকসুসহ সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে এবং জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে হবে।

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সোহাইল আহমদ শুভসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১২/০১/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.