রাজশাহীঃ জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট (বিইসিএম) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাকিবুল হাসানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বিইসিএম বিভাগের শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ রবিউল ইসলাম সরকার।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বিইসিএম বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি প্রদানের সময় রুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও তাদের সাথে সংহতি পোষণ করে উপস্থিত ছিলেন।স্মারকলিপির সাথে জুলাই অভ্যুত্থানের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার প্রমাণস্বরূপ শিক্ষক রাকিবুল হাসানের ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশটের কপি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে অভিযোগের বিষয়গুলো সংযুক্ত করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিইসিএম বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থী। উক্ত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব রাকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে বিভাগের বিভিন্ন সিরিজের শিক্ষার্থীদের সাথে বিনা কারণে ক্লাসে খারাপ ব্যবহার, অপমানসূচক সম্বোধন এবং পরীক্ষার খাতায় স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, গত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে হেয় করে তিনি ফেসবুকে একাধিক স্টোরি আপলোড করেছেন, এবং আমাদেরকে সরাসরি উদ্দেশ্য করে রুয়েট কমন রুমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং আক্রোশমূলক মন্তব্য ও স্টোরি প্রকাশ করেছেন। তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের কটাক্ষ করেও একাধিক স্টোরি প্রকাশ করেছেন, যা একজন শিক্ষক হিসেবে তাঁর নৈতিকতা এবং মনুষ্যত্বের প্রতি প্রশ্ন তোলে। নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর এরূপ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আমাদের ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। গণঅভ্যুত্থানকালীন সময়ে তিনি উচ্চতর শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে অবস্থান করলেও অতিসম্প্রতি দেশে ফিরে এসে স্বপদে যোগদান করেছেন, যা বর্তমানে আমাদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই আমরা রাকিবুল হাসানকে আমাদের বিভাগ থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি। একইসাথে কোর্স, থিসিস, সেমিস্টার পরীক্ষাসহ বিভাগের কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে তাঁকে যেন অন্তর্ভুক্ত না করা হয়, তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে রুয়েটের যে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। যদি যথোপযুক্ত জবাবদিহি না দিতে পারে তাহলে প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রুয়েটের শিক্ষক সিদ্ধার্ত সংকর, রাকিবুল, নিবির সহ অনেকের বেতন বন্ধ আছে। আইন এডভাইজর না থাকার কারনে অভিযুক্তদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হচ্ছিলো। আমরা আইন এডভাইজর নিয়োগ দিয়েছি, সামনের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০১/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.