রাজশাহীঃ রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে ল্যাপটপ চুরির পর সিসিটিভি ফুটেজ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে সি ব্লকের ২০৫ নম্বর কক্ষ থেকে আবু রায়হান নামে এক শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ চুরি হয়। দুদিন পর রবিবার (২২ ডিসেম্বর) চুরির ফুটেজ দেখতে গিয়ে দেখা যায়, ওই সময়ের কোনো ফুটেজ নেই।
এদিকে, চুরির পর সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব হওয়ায় কলেজ ছাত্রাবাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া হল প্রশাসনের গাফিলতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে চলছে নানা সমালোচনা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সিসিটিভি ক্যামেরা ২৪ ঘণ্টা সচল রাখার কথা থাকলেও তা নিশ্চিত করা হয়নি। ক্যামেরার ফুটেজ হারানোটা কলেজ প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা।
ছাত্রাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব হওয়ায় ইচ্ছাকৃত ষড়যন্ত্রের সন্দেহও তৈরি হয়েছে। দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে তারা কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি জানান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, “চুরির বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই হল প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল, ফুটেজ দেখে চোর শনাক্ত করা হবে। কিন্তু পরে জানলাম, ওই সময়ের ফুটেজ নেই। এতে আমরা চরম হতাশ।”
এদিকে হল প্রশাসন জানিয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরা চুরির সময় কাজ করেনি। বৈদ্যুতিক মিটারে টাকা না থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। তবে শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনের এ ব্যাখ্যা মানতে নারাজ।
ছাত্রাবাসের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রি-পেইড মিটারের ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাওয়ায় সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তিনি বিষয়টি আগে জানালে এমন ঘটনা ঘটতো না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “যদি চুরির সময় ক্যামেরা বন্ধ থাকে, তাহলে এতগুলো ক্যামেরা বসিয়ে লাভ কী? আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে না।”
সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. যহুর আলী বলেন, “ল্যাপটপ চুরির বিষয়ে ভুক্তভোগীকে লিখিত আবেদন করতে বলেছি। ফুটেজ গায়েব হওয়ার বিষয়টি রাজ আইটি সাপ্লাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করছি। আইনি পদক্ষেপ নিতে আমরা কাজ শুরু করেছি।”
তিনি বলেন, “সিসিটিভি ক্যামেরার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যারা নিয়েছেন, তাদের ব্যর্থতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২২/১২/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.