ঢাকাঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলের একটি কক্ষ থেকে মাদক সেবনরত অবস্থায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এক বিদেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেল আড়াইটার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৬/বি কক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীকে মাদকসহ আটক করে হল প্রশাসন।
আটক আশির্বাদ যাদব ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুষ্টিয়া) ইলেক্ট্রনিক এন্ড ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ এর আবাসিক শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। তার বাড়ি নেপালের কাঠমান্ডুতে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, হলের ৩১৬/বি কক্ষ থেকে গাজার দুর্গন্ধ পেয়ে আমরা হল প্রাধ্যক্ষকে জানাই। পরে প্রাধ্যক্ষ স্যার হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওই কক্ষে অভিযান চালায় এবং তাকে গাজাসহ হাতেনাতে আটক করে। এসময়, তার কাছে ৪ প্যাকেটে গাজা ও গাজা খাওয়ার সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৬/বি কক্ষটিতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বাস্কেটবল খেলোয়াড় মুহাম্মদ কামরুল।
জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত আশির্বাদ যাদব জানান, গতকাল রাতে কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে তিনি মার্কেটিং বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী খালেদ সিয়ামের সাথে যোগাযোগ করে মীর মশাররফ হোসেন হলে রাত্রিযাপনের জন্য আসেন। পরে, খালেদ সিয়াম তাকে হলের ৩১৬/বি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করে। ওই কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বাস্কেট বল খেলোয়াড় কামরুল থাকেন। তিনি জানান, বাস্কেটবল খেলার সূত্রে তারা তিনজন পূর্বপরিচিত।
এ বিষয়ে জানতে খালিদ সিয়ামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে হল প্রাধ্যক্ষকে মুঠোফোনে তিনি জানান, ‘মাসখানেক আগে বাস্কেটবল খেলারসূত্র ধরে অভিযুক্তের সাথে তার পরিচয় হয়। আজ ভোরবেলা সে আমার কাছ থেকে চাবি নিয়েছে। আজকে তার চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা। আমি এখন ঢাকায় আছি। তাই এর চেয়ে বেশি বলতে পারছি না।’
কামরুলের কক্ষে মাদকসেবনের বিভিন্ন উপকরণ পাওয়ার বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ সিয়ামকে জিজ্ঞেস করলে সিয়াম জানান, এটা খুবই একটা বাজে কথা বললেন স্যার। কামরুল আমাদের সাথে চলে। সে এ ধরনের কাজ করলে জানতাম।
এ বিষয়ে জানতে কামরুলকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, আমরা মাদকবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ইনফরমারদের তথ্যমতে ৩১৬/বি তে অভিযান চালিয়ে তাকে হাতেনাতে ধরি। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, সে হলে এর আগেও এসেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে জানিয়েছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, তাকে মাদকসহ পাওয়া গেছে। আমরা তাকে এইভাবে ছেড়ে দিতে পারি না। তাই তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি। এছাড়া যে কক্ষে মাদক পাওয়া গেছে সে কক্ষে যে থাকেন এবং এঘটনায় যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য হল প্রশাসনকে বলেছি।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, জব্দকৃত মাদকের পরিমাণ প্রায় ১০ গ্রাম হবে। আপাতত আমরা তাকে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২০/১২/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.