তানজিদ শাহ জালাল ইমন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের(ববি) সম্মুখে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদ। প্রতিদিনই ঘটছে কোন না কোন দূর্ঘটনা। ক্যাম্পাসে নিরাপদে প্রবেশের জন্য ফুটওভার ব্রিজ ও ফুটপাথ চান শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ব্যস্ত সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করায় পারাপারে নিরাপত্তাহীনতায় থাকেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোলার মোড় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মায়িশা ফওজিয়া মিম বাসের ধাক্কায় নিহত হলে দাবিটি আরও জোরালো হয়।পাঁচ দিন না যেতেই একই স্থানে দূর্ঘটনার শিকার হন মোটরসাইকেল আরোহী মো.সিফাত ও সিহাব। দূর্ঘটনার শিকার সিফাতের অবস্থা আশংকাজনক তিনি আইসিইউ তে ভর্তি রয়েছে, সিহাব আশংকা মুক্ত।
বরিশাল-কুয়াকাটা ও ভোলা-বরিশালের মহাসড়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুপাশ দিয়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের দুই পাশে রয়েছে দুটি সুউচ্চু সেতু,শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও খয়রাবাদ সেতু। ব্যস্ত এসব সড়কে সারা দিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। উঁচু সেতু থেকে নামা যানবাহনে থাকে বেপরোয়া গতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি গেইটের সবগুলোর সামনেই মহাসড়ক। কিন্তু, কোনো পদচারী-সেতু বা ওভারব্রিজ এবং পর্যাপ্ত স্পিড ব্রেকার না থাকায় যানবাহন গুলো প্রায়ই বেপরোয়া গতি ধারণ করে।ফলে, প্রতিদিন ই ঘটছে কোন না কোন দূর্ঘটনা।
নিত্যনৈমিত্তিক এইসব দূর্ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পেতে চান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এজন্য তারা প্রশাসনের কাছে ফুটওভার ব্রিজ ও ফুটপাথ নির্মাণ সহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী নওরিন নূর তিশা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এতো বছর হলেও এর পাশ্ববর্তী এলাকায় নিরাপদ সড়কের কোন ব্যবস্থা এখনো হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় ও বরিশালের প্রশাসন এর জন্য দায়ী। আমরা শীঘ্রই এসব সমস্যার সমাধান চাই।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরোজ বৃষ্টি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে দূর্ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র। আমাদের বোন মায়িশা ফওজিয়া মিমের মৃত্যুতে পুরো দেশ শোকাহত। আমরা সড়কে আর কোন দূর্ঘটনার চাই না। পর্যাপ্ত আলো, ফুটওভার ব্রিজ, ফুটপাথ এবং পরিমিত স্পিড ব্রেকার সহ যাবতীয় সমস্যার আশু সমাধান চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন ফয়সাল জানান, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে তারা শীঘ্রই ফুটওভার ব্রিজ ও ফুটপাথ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করবেন। ইতোমধ্যে, তাদের একটি দল মাঠ পর্যায়ে এসে স্থান পরিদর্শন ও মাটি পরীক্ষা করে গিয়েছে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যাবস্থার জন্য পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির সাথেও যোগাযোগ হয়েছে, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে তাদের কার্যক্রম ও শুরু হবে। ইতোমধ্যেই, স্পিড ব্রেকার নির্মাণ এবং ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার এতো বছর পার হলেও নিরাপদ সড়কের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তেমন কোন কার্যক্রম চোখে না পড়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে পূর্বে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে সেগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। তবে কিছু সহযোগিতা আমরা পেয়েছিলাম। সম্প্রতি সময়ে ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনার ফলে নিরাপদ সড়কের বিষয় টি সবাই গুরুত্বসহকারে দেখছে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/১১/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.