এইমাত্র পাওয়া

অসহযোগ আন্দোলনে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তার সমর্থন

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

দেশব্যাপী আজ রবিবার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে সমর্থন দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম। এ নিয়ে তিনি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নিজের মতামত তুলে ধরেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন চেয়েও ব্যাংক খাতের দুরবস্থার বিষয়টি তুলে ধরেছেন আরেকটি মন্তব্যে।

 নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক। তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই ও স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগে কর্মরত এবং একটি প্রকল্পের পরিচালক।

গত শুক্রবার ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘আপনাদের সবার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমি মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক,

বাংলাদেশ ব্যাংক। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। দীর্ঘ ১৫ বছর চুপ থেকে এই সরকারের খুন, ব্যাংক লুটেরা, দুর্নীতি সহ্য করেছি। কথা বলতে পারিনি।’

আরও লেখেন, ‘সম্প্রতি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন, নিপীড়ন হত্যা ও অনিয়মের কথা আমরা বলতে পারছি না, হৃদয় যেন আমাদের অন্ধ হয়ে গেছে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকারের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত রাষ্ট্রের মালিক জনগণ তথা ছাত্রদের সঙ্গে থাকব, ইনশাআল্লাহ। রাষ্ট্রের মালিক যদি জয়লাভ করে, তাহলে হয়তো আমি আবার রাষ্ট্রের মালিকের সেবা করতে ফিরে যাব। আর এই সরকার যদি টিকে যায় তবে আমি হয়তো চাকরিতে ফিরব না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জীবন ও জীবিকা সর্বময় ক্ষমতার মালিক আল্লাহর হাতে।’

এরপর ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন চাই’ শীর্ষক আরেকটি স্ট্যাটাসে নজরুল ইসলাম লেখেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আর স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। এই ধরনের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর গভর্ন্যান্স সিস্টেম সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে ব্যাংকিং খাতের ওপর প্রভাব পড়েছে। সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপ এসব প্রতিষ্ঠানে কাম্য নয়। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে তাই হয়েছে, যার ফলাফল ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থা। স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তিরোহিত।’

আরও লেখেন, ‘দেখুন, ডিবির হারুন বা পুলিশের পল্লব সরাসরি জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা হয় না। অথচ আমি সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে সহমর্মিতা জানিয়ে একটি লেখা শেয়ার করেছি, তাতেই সবাই নড়েচড়ে বসেছে। দেখা যাক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার মর্যাদা পুনরুদ্ধার করতে আমার পাশে দাঁড়ায় কি না? একটি কঠিন পরীক্ষা। দেশের আর্থিক খাতের পুনর্গঠন ও সংস্কারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের জোর দাবি জানাচ্ছি। আমার জন্য দোয়া চাই, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন চাই।’

জানা গেছে, ফেসবুকে এমন মন্তব্য করার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনেকেই তাকে এসব মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য বলেছেন। কিন্তু তিনি নিজের সিদ্ধান্তে বহাল আছেন। উল্লেখ্য, ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।

ফেসবুক পোস্টের পর নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেসবুকে এই মন্তব্য করেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। আমি যা লিখেছি, সেই সিদ্ধান্তে বহাল আছি।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এ/০৪/০৮/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading