শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরম আবহাওয়া বিরাজ করছে দেশজুড়ে। অসহনীয় গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। গতকাল শুক্রবার ইতোমধ্যে আবহাওয়া অফিস থেকে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে অনুরোধ জানায় অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। তবে শিক্ষা প্রশাসন জানিয়েছে, আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত নেই। শুধুমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশজুড়ে বহমান তাপদাহের ওপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
রমজান, ঈদ ও বৈশাখের টানা ২৬ দিনের ছুটি কাটিয়ে আগামীকাল রোববার (২১ এপ্রিল) খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এর আগে, তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে করণীয় ঠিক করতে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বৈঠকে বসে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত ওই বৈঠকে হয়নি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কী করণীয় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে ছুটি বাড়ানো বা বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হলে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করতে হয়। কারণ হিট এল্যার্ট বা অন্য কিছু ঘোষণা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি বন্ধ রাখতে হয় তবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরামর্শে তা করা হয়। এ বিষয়ে যোগাযোগ করবে মন্ত্রণালয়। তবে আপাতত বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
ছুটি বাড়ানোর দাবি জানিয়ে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) অভিভাবক ঐক্য ফোরাম গণমাধ্যমে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। এতে বলা হয়েছে, দেশে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মানুষজনকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করছে প্রশাসন। এর মধ্যে স্কুল কলেজ খুললে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বলে মত সংগঠনটির।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চলে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মানুষজনকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করছে প্রশাসন। এরমধ্যে স্কুল-কলেজ খুললে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা আগামী ৭ দিনের জন্য বন্ধ রাখার দাবি জানাচ্ছেন অভিভাবকরা।
বছরের শুরুতে প্রকাশিত ছুটির তালিকা অনুযায়ী— ১০ মার্চ থেকে প্রাথমিক ও মাদরাসায় এবং ১১ মার্চ থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি শুরুর কথা ছিল। শিখন ঘাটতি পূরণে মাধ্যমিকে ১৫ দিন ছুটি কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে রোজার শুরুতে প্রায় দুই সপ্তাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চালু ছিল। আর রোজার প্রথম ১০ দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট হলে দফায় দফায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আসে। সর্বশেষ আপিল বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী—ছুটি সমন্বয় করে রোজায় ১৫ দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার পক্ষে রায় দেন। আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী— প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০ দিনের ছুটি কমানো হয়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২০/০৪/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.