নিউজ ডেস্ক।।
হলটিতে চলছে এবারের ঈদের সিনেমা শাকিব খান অভিনীত ‘রাজকুমার’। সিনেমাটির পোস্টারও সাটানো আছে দেয়ালে, হলের প্রবেশমুখে।
ভেতরে শো চলছে। পরবর্তী শো দেখতে হলটির সামনে দাঁড়িয়ে কিছু সিনেপ্রেমী।
এরইমধ্যে জানা গেল, হলটিতে আর সিনেমা প্রদর্শন করা হবে না। এটি ভেঙে তৈরি হবে দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাদরাসা।
আশির দশকে তুমুল জনপ্রিয় সিনেমা হলগুলোর একটি নরসিংদীর রায়পুরার হাসনাবাদ এলাকার ‘ছন্দা’। তবে দর্শকদের হল বিমুখতাসহ নানা কারণে এ ব্যবসায় নেমেছে ধস।
হলটি ভেঙে প্রতিষ্ঠা করা হবে ‘ইদরিসিয়া দারুল কুরআন মাদরাসা’ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ইতোমধ্যে বিক্রির প্রক্রিয়া শেষ বলে জানিয়েছেন মালিকপক্ষ ও ওই মাদরাসার জিম্মাদার মাওলানা মোকাররম হোসেন। সিনেমা হলের জমিটি কিনতে ২০ লাখ টাকা বায়নাও করা হয়েছে।
সিনেমা হলের সামনে ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার পাশে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিবৃন্দ নামে একটি ব্যানার সাঁটানো রয়েছে। ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ছন্দা সিনেমা হলটি মাদরাসার জন্য বায়না করা হয়েছে। চুক্তিমূল্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা, বায়না মূল্য ২০ লাখ টাকা। সদকায়ে জারিয়ার এ মহৎ কাজে আপনাদের আন্তরিক দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি। মাদরাসার রশিদ ছাড়া কোনোপ্রকার লেনদেন করবেন না। ’
মালিকপক্ষ বলছে, করোনার পর থেকে নানা কারণে সিনেমা হলে দর্শকের উপস্থিতি কমেছে। ব্যবসায় নেমেছে ধস। ইতিমধ্যে হলটি বায়না দলিলে বিক্রির প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আগে হলটি ভালোই চলতো। পাঁচ-সাত বছর ধরে নানা কারণে আগের মতো আর চলে না। মাদরাসা-এতিমখানা ঘেঁষে সিনেমা হল। এখানে নাচগানের আওয়াজ আসে। মাদরাসার জায়গাও কম। তাই হয়ত হলটি কিনে নিয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
‘ইদরিসিয়া দারুল কুরআন মাদরাসা’র জিম্মাদার মাওলানা মোকাররম হোসেন বলেন, জমির বায়না করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য বিত্তবানসহ সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্যও চাওয়া হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুতই জমির নির্ধারিত মূল্যের বাকি টাকা পরিশোধ করে মাদরাসা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করা হবে। দলিল করাসহ প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় হবে।
সিনেমা হলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমন খান জানান, বর্তমানে সিনেমা ব্যবসা মন্দা হওয়ায় তাদের অবস্থা শোচনীয়। মালিকপক্ষ ঠিকমতো বেতন দিতে পারে না। সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই অন্য পেশা বেছে নিচ্ছে।
ছন্দা সিনেমা হলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রুবেল আহমেদ বলেন, দীর্ঘ দিন লোকসান গুনে হলটি চলছিল। মাস শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, জেনারেটরসহ নানা মেইনটেন্যান্স খরচ রয়েছে। লোকসানি এই প্রতিষ্ঠান আর টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। কয়েক বছর আগেও সপ্তাহে দু-একটি সিনেমা রিলিজ হতো, এখন মাসেও একটি হয় না। নতুন সিনেমা মুক্তি পেলে তা দু-এক সপ্তাহের মধ্যেই ইন্টারনেটে বা অন্যান্য কোনো মাধ্যমে পাওয়া যায়। তাই হলে তেমন কেউ সিনেমা দেখতে আসে না। নিরুপায় হয়ে এ ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হচ্ছে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/২১/০৪/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.