এইমাত্র পাওয়া

অবরোধেও চলবে ক্লাস, ‘উদ্বিগ্ন’ শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

ঢাকাঃ বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা তিনদিনের অবরোধেও দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস চলবে। এতে সন্তানদের স্কুল-কলেজ-মাদরাসায় পাঠানো নিয়ে ‘দোটানায়’ পড়েছেন অভিভাবকরা। মূলত রাস্তায় যাতায়াত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।

অভিভাবকরা বলছেন, বার্ষিক পরীক্ষা ও দুটি শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে সামষ্টিক মূল্যায়নের আগে শেষ সময়ের ক্লাসগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য স্কুলে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি ঘিরে রাস্তায় ভাঙচুর, আগুন ও সহিংসতার ঘটনায় চলাচল নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় যথারীতি শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা মেনে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর ও ১-২ নভেম্বর) রাজনৈতিক দলের অবরোধের দিনে ক্লাস হবে।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, ‘যথারীতি আমাদের ক্লাস হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকলে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকবে। আশা করি, শিক্ষার্থীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে। আমি মনে করি— শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এসব হরতাল-অবরোধের আওতামুক্ত রাখা উচিত।’

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ক্লাস বন্ধের কোনো নির্দেশনা নেই। আগের সূচি অনুযায়ী ক্লাস হবে।’

গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন তালুকদার বলেন, ‘এবার তো শিক্ষাবর্ষ একটু আগেই শেষ করছি আমরা। নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারপরও এখন একটু উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেলো। আশা করি—রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষার্থীদের দিক বিবেচনা করে কর্মসূচি দেবে। আমরা ক্লাস চালিয়ে যাবো। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তারা যেন সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করে স্কুলে আসেন।’

এদিকে, রাজধানীর বাইরের বিভিন্ন বিভাগীয় শহর এবং জেলা শহরের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ক্লাস-পরীক্ষা চলবে বলে জানা গেছে। খুলনা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, শরীয়তপুর, নরসিংদীর বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অন্যদিকে অভিভাবকরা বলছেন, বছরের শেষদিক হওয়ায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও তাদের সন্তানদের বাধ্য হয়ে স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে। সামনে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন। এখন ক্লাস না করলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাছাড়া ঢাকার নামি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাসে অনুপস্থিত থাকলে জরিমানা গুনতে হয়। সবদিক বিবেচনায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন।

রাকিবুল হাসান নামে একজন অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে ভিকারুননিসার বসুন্ধরা শাখার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। ওদের তো নতুন শিক্ষাক্রম। শিখনকালীন মূল্যায়ন। সামনে সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। সবকিছু নতুন। এখন ক্লাসে না গেলে পিছিয়ে পড়বে ও। আমার বাসা নিকুঞ্জ। বেশি পথ নয় স্কুল। তবুও হরতাল-অবরোধে সন্তানদের বাইরে বের করতে ভয় লাগে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক উত্তাপ থাকলেও দেশের পরিস্থিতি এমন হয়নি যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে না। এ সময়ে ক্লাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটা শিক্ষাবর্ষ শেষ হচ্ছে। আরেকটা শুরু হবে। করোনাভাইরাসের কারণে যে ঘাটতি হয়েছিল, সেটা পূরণে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাকার্যক্রমকে কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখা।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/৩০/১০/২০২৩

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.