এইমাত্র পাওয়া

জাল সনদে ২৩ বছর ধরে চাকরি!

কক্সবাজারঃ সনদে বয়স জালিয়াতি করে বিগত ২৩ বছর ধরে জেলার কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে চাকরির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে অফিস সহায়ক শংকর কুমার শীলের বিরুদ্ধে গত ১০ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফারুক, আবদুল করিম, নেজাম উদ্দিন, মো. শাহাজাহানসহ কয়েক ব্যক্তি। এরপর শংকরের বয়স জালিয়াতির ঘটনাটি কুতুবদিয়ায় চাউর হলে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়। স্থানীয়রা এ ঘটনায় তদন্তপূর্বক অভিযুক্ত কর্মচারী শংকরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। অভিযুক্ত শংকর কুমার শীল উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের চানমিয়া পাড়া গ্রামের সাচি রাম শীলের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বিগত ২৩ বছর ধরে অফিস সহায়ক পদে শংকর কুমার শীল কর্মরত রয়েছেন। চাকরিতে যোগদানের সময় তিনি তথ্য গোপন করে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করেছেন মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র ইউএনও অফিসে জমা দিয়েছেন। সেখানে তার জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০ সাল।

তিনি ১৯৮২ সালে কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এসএসসি’র নম্বরপত্রে তার জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে ১ জানুয়ারি ১৯৬৫ সাল। তবে চাকরিতে যোগদানের সময় তিনি এসএসসি সনদপত্র জমা দেননি। এছাড়া তার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে ১ জানুয়ারি ১৯৭৫ সাল। অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণির প্রত্যয়নপত্র, এসএসসির নম্বরপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার তিন ধরনের জন্মতারিখ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শংকর কুমার শীল দীর্ঘদিন ধরে কুতুবদিয়ায় কর্মরত থাকার সুবাদে ইউএনও অফিসে নানা তদবিরবাজি করে লাখ লাখ টাকার মালিক বনে গেছেন। উপজেলার বড়ঘোপ বাজারে তার ২তলা বিশিষ্ট দুটি পাকা দোকান রয়েছে। পাশের উপজেলা চকরিয়াতেও জায়গা কিনেছেন। বর্তমানে কক্সবাজারে সরকারি কর্মচারী প্লটেও ৭ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের কাজ চলছে।

অভিযোগের বিষয়ে শংকর কুমার শীল বলেন, ‘এখন আমার বলার কিছুই নেই। তদন্তের আগে আমি এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারব না।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘অফিস সহায়ক শংকর কুমার শীলের বিরুদ্ধে আমার কাছে এ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকেও অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।’

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, ‘কুতুবদিয়া ইউএনও অফিসের কর্মচারী শংকরের সনদে বয়স জালিয়াতির বিষয়টি তদন্ত করা হবে। জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৫/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.