কিশোরগঞ্জঃ জেলার পাকুন্দিয়ার পাইক লক্ষিয়া এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হাজী মো. মাছিম উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা জালিয়াতির মাধ্যমে একটি চক্র বাইপাস সড়ক নির্মাণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে অধিগ্রহণের এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯৪ সালের ৮ই জানুয়ারি পাইক লক্ষিয়া গ্রামের হাজী মো. হাছিম উদ্দিন ২৯ শতাংশ এবং একই গ্রামের মো. জিল্লুর রহমান ২৩ শতাংশ ভূমি বিদ্যালয়ের অনকূলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নামে দলিল রেজিস্ট্রি করে দেন। সম্প্রতি সরকারি বাইপাস সড়ক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরিপ কাজ শেষে জায়গা চিহ্নিত করে যায় এবং জেলা প্রশাসন ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করে। এতে বিদ্যালয়ের ভূমির একটি অংশ প্রকল্পের মধ্যে পড়ায় একটি চক্র স্কুলের জায়গা অধিগ্রহণের টাকা হাতিয়ে নেয়ার টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে।
এরপরই বিদ্যালয়টির দুইজন জমিদাতার মধ্যে মো. জিল্লুর রহমান বিদ্যালয়কে দেয়া জমির দলিল গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে নিজ নামে নামজারি ও জমা খারিজের মঞ্জুরি আদেশ নিয়ে ১৩.৬ শতাংশ ভূমির অধিগ্রহণের এক কোটি ৭৬ লাখ টাকার চেক তুলে নেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে সভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনকারী মো. জিল্লুর রহমানের নামজারি ও জমা খারিজের মঞ্জুরি আদেশ (নং-২৮২৬(৯-১)২২-২৩) বাতিলের জন্য গত পহেলা অক্টোবর পাকুন্দিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করেন। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল আফছার কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবর অধিগ্রহণের টাকা যেন ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে না পারে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় এল,এ মিস মোকদ্দমা (নং-০১(১৩)/২০২৩) রুজু হয় এবং আগামী ৩১শে অক্টোবর মোকদ্দমার শুনানির তারিখ ধার্য করে উভয় পক্ষকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নোটিশ পাঠিয়েছেন।
এ ব্যাপারে হাজী মো. মাছিম উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান ও প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল আফছার জানান, মো. জিল্লুর রহমানের খরিদ করা ২৩ শতাংশ ভূমি স্কুলকে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার পর তার আর এই ভূমিতে কোনো স্বত্ব্ব নেই। তিনি দলিল করে দেয়ার পর স্কুলের নামে এই জায়গার খারিজ করে খাজনাও দেয়া হয়েছে। অথচ মো. জিল্লুর রহমান স্কুলকে দেয়া দলিলটি গোপন করে জমি কেনার আগের দলিলটি দিয়ে জালিয়াতি করে স্কুলের জায়গা নিজের নামে খারিজ করে নিয়েছেন।
পরে এসব জালিয়াতির কাগজ দিয়ে তিনি সরকারের কাছ থেকে ভূমি অধিগ্রহণের এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। এ পরিস্থিতিতে তারা বাধ্য হয়ে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছেন।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মো. জিল্লুর রহমানের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে ফোনটি তার ছেলে কাওসার ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে স্কুল করার জন্য জায়গার দলিল দেয়া হয়েছিল। কিন্তু জায়গা কম হওয়ায় ওই জায়গায় স্কুল না হয়ে অন্য জায়গায় হয়েছে। সে কারণে দলিলে দেয়া শর্ত অনুযায়ী, আমরাই এ জায়গায় মালিক এবং এটি দলিলে স্পষ্ট লেখা আছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৩/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.