জয়পুরহাটঃ জেলার পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করে পরে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে ৭৩ লাখ টাকা নিয়েছেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। পরে লোক দেখানো পরীক্ষা নিয়ে তাদের চাকরি পাকাপোক্ত করেছেন।
সাজানো এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি জানতে পেরে বেশ কয়েকজন চাকরি প্রার্থী ও তাদের অভিভাবক ২৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম উল্লেখ করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককেও দেওয়া হয়েছে। এরপরও নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়নি। গত ৭ অক্টোবর সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে পাড়ইল গ্রামের সাঈদার ইসলাম, অফিস সহায়ক পদে রায়পুর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম, নিরাপত্তাকর্মী পদে রতনপুর গ্রামের রাকিবুল ইসলাম ও আয়া পদে কুমকুমকে নিয়োগ দেন। নিয়োগ বোর্ডে পদাধিকারবলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁকে ছাড়াই নিয়োগ বোর্ডের সব কার্যক্রম সমাপ্ত করেছেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।
কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে অংশগ্রহণকারী নাইম হোসেন জানান, পরীক্ষার আগেই সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক যোগসাজশ করে টাকার বিনিময়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছেন; যা অবৈধ।
আয়া পদে আবেদন করা রোজিনা খাতুন জানান, সাজানো নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়টি জানতে পেরে তারা সংশ্লিষ্ট সব কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। এরপরও ৭ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়।
অফিস সহায়ক পদে আবেদনকারী আজিজ বাবু বলেন, পরীক্ষার দিন আমরা কেন এসেছি এ কথা বলে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। আমরা নতুনভাবে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সভাপতি মো. আনোয়ার চৌধুরী বলেন, নিয়োগ বোর্ডের সবকিছুই প্রধান শিক্ষক করেছেন। আমি শুধু স্বাক্ষর করেছি। কিছু জানতে চাইলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণসহ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফজলে এলাহী। তিনি বলেন, নিয়োগ বৈধ্যভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষার দিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কেন আসেননি তা বলতে পারব না। তবে তাঁর নির্দেশেই নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার আগেই দু’জনের অভিযোগ পেয়ে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও কীভাবে নিয়োগ সম্পন্ন হয়! তবে নিয়োগ পরীক্ষার দিন অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা সুলতানা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.