এইমাত্র পাওয়া

ভুয়া ছাড়পত্র নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোকাদ্দেছ

মেহেরপুরঃ জেলার গাংনী উপজেলার জুগিরগোফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে সদ্য নিয়োগ পেয়েছেন মোকাদ্দেছ আলী। এর আগে তিনি আমতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, মোকাদ্দেছ আলীকে বিদ্যালয় থেকে কোনো ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। তিনি রেজুলেশনসহ অন্যান্য কাগজপত্রে ভুয়া স্বাক্ষর করে ছাড়পত্র দাখিল করেছেন জেলা শিক্ষা অফিসে।

এ ছাড়াও মোকাদ্দেছ আলী কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন সভাপতি, তবে মোকাদ্দেছ আলী জানান, তিনি যথাযথ প্রক্রিয়া মেনেই প্রধান শিক্ষক হয়েছেন।

জুগিরগোফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বিদ্যালয়ে সদ্য নিয়োগ পেয়েছেন আমতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোকাদ্দেছ আলী।

গত ১ সেপ্টেম্বর তিনি যোগদান করেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও জমা দেন জেলা শিক্ষা অফিসে, কিন্তু সেসব কাগজপত্র ভুয়া বলে দাবি করেছেন আমতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শফিকুল ইসলাম।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘রেজুলেশনসহ বিভিন্ন সময়ে যেসব বৈঠক হয়েছে, তার কাগজ ও রেজুলেশন বই শিক্ষক মোকাদ্দেছ আলী চুরি করে ভুয়া স্বাক্ষর ও রেজুলেশন করেছেন। রেজুলেশন বই পাওয়া যাচ্ছে না ও কোনো ছাড়পত্রও দেয়া হয়নি তাকে।’

টাকা জালিয়াতির বিষয়য়ে সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়গুলো তিনি বুঝিয়ে দেননি। জেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত এক লাখ ৯০ হাজার টাকার মধ্যে মাত্র দুটি কম্পিউটার কেনা হয়েছে, যার বাজার দর মাত্র ৮০ হাজার টাকা। বাকি টাকার কোনো হিসাব মেলেনি।

‘সংসদ সদস্যের দেয়া তিন লাখ টাকাসহ মোট আট লাখ টাকা তিনি সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে তুলেছেন। এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। সেটি এরই মধ্যে তদন্ত হয়েছে। সেখানে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মোকাদ্দেছ।’

এদিকে এক প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র না নিয়ে কীভাবে তিনি অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিলেন, এটি বোধগম্য নয় বলে জনান জুগিরগোফা গ্রামের মেম্বার আশাদুল ইসলাম আশা।

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে জুগিরগোফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একজন অফিস সহায়ক ও একজন প্রহরী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের দুজনের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক মোকাদ্দেছ ১৮ লাখ টাকা নিয়েছেন।’

গ্রামের সাবেক মেম্বার আসগর আলী বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ না দিয়ে কখনও অফিস সহায়ক নিয়োগ দিতে পারে না কর্তৃপক্ষ, কিন্তু নিজ ক্ষমতাবলে প্রধান শিক্ষক এ নিয়োগ দিয়ে অর্থ আয় করেছেন।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘বর্তমান প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ের পরিবেশ সন্তোষজনক নয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাইরে ঘুরে বেড়ায় ও শিক্ষকদের অনেকেই ছুটি না নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন না। পরে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।’

শিক্ষক মোকাদ্দেছ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘বৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়েছি। আমতৈল বিদ্যালয়ের সভাপতির কোনো কথাই সঠিক নয়। আমি কোনো স্বাক্ষর জালিয়াতি করিনি। টাকা আত্মসাতের অভিযোগটিও মিথ্যা।’

এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে তিনি অনাগ্রহ দেখান।

জেলা শিক্ষা অফিসার আব্বাছ উদ্দীন বলেন, ‘শিক্ষক মোকাদ্দেছ আলী অফিসে কাগজপত্র জমা দিয়ে নিয়োগ পেয়েছেন, কিন্তু আমতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শফিকুল ইসলামসহ কমিটির লোকজন সেটিকে ভুয়া বলে দাবি করেছেন।

‘এরই মধ্যে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের একটি তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে ও এর সত্যতা মিলেছে। প্রতিবেদন বিভাগীয় শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, সেটি বিভাগীয় শিক্ষা অফিস নির্ধারণ করবে।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৫/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.