এইমাত্র পাওয়া

বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রমোশন চাই

মোঃ মেজবাহুল ইসলাম প্রিন্স।।

প্রমোশন প্রত্যেকটি পেশাকে আকর্ষণীয় করে, সেই পেশার মর্যাদা বৃদ্ধি করে। স্বভাবতই সবাই এ ধরনের পেশা গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়। আমরা দেখতে পাই সরকারি বা বেসরকারি প্রায় প্রত্যেকটি পেশায় প্রমোশন রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি পেশাই ব্যতিক্রম আর সেটি হল শিক্ষকতা। বিশেষ করে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকগণ এ বঞ্চনার শিকার।

প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত এমনকি ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত প্রোমোশনের ব্যাবস্থা থাকলে শিক্ষকগণ এতটা হতাশ হতেন না। মেধাবী ছাত্ররা এই পেশায় আগ্রহী হতে কোন দ্বিধা করতো না, আপাতত চাকরিটা নিলাম এমন ভাবনাটা কমে যেত তাদের।

প্রমোশন ছাড়া কোনো পেশাই কাউকে আকর্ষণ করে না। এরকম একটা একঘেয়েমি পূর্ণ পেশায় কেউ আসতে চায় না। সরকারের অফিসারগণ কখোনোই প্রথা ভেঙ্গে কোনো কাজই করতে চান না। আবার মন্ত্রীগণ পুরোপুরিভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকেন। তাই বছরের পর বছর শিক্ষকতা পেশার কোনো উন্নয়ন হয়নি। তাদের নিয়ে নুতন কিছু ভাবার প্রয়োজনীয়তা কেহই মনে করেনি।

যদি এ ধরনের প্রমোশনের ব্যবস্থা থাকতো তাহলে অনেক Phd ধারিরাও প্রাথমিক শাখায় চাকরী নিত। ভারতে কিন্তু অনেক Phd করা শিক্ষক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরী করেন। কারণ সকল Phd করা চাকরীজীবী দের বেতন সমান। তিনি যেখানেই চাকুরী করেন না কেন সেটা মাধ্যমিক বা বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্বে একই ইনডেক্স নিয়ে বিদ্যালয় পরিবর্তনের মাধ্যমে বা নিজ এলাকার বা বর্তমানের চেয়ে উন্নত কোনো বিদ্যালয়ে যাবার সুযোগ ছিলো। সরকার না বুঝে সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে শিক্ষকগণকে হাত পা বেধে একই স্থানে সারাজীবন কাজ করার ব্যাবস্থা করেছেন। অথচ সামান্য একটা অপশন রাখলেই এই শিক্ষকদের এতটা কস্ট হতো না।

আর এ মুহুর্তে বেসরকারি শিক্ষকদের টাইমস্কেল নেই, বদলি নেই, প্রমোশন নেই, উচ্চতর গ্রেড নেই, যেন এ চাকরীর কোনো ভবিষ্যৎই নেই। আর এ কারনেই যারা এ পেশায় এসেছেন তাদের মধ্যে একটা যাই যাই মনোভাব কাজ করে। বিশেষ করে তরুণ শিক্ষকগণ এ পেশায় আসার পরপরই হতাশ হয়ে পরেন। তারা তখন বিকল্প পেশা খুঁজতে শুরু করেন। আর তখনই শিক্ষকতা পেশা হয়ে পরে গৌণ।

তবে হ্যা আছে, বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর ৯৭% সন্তানদের শিক্ষার গুরুভার তার কাধে। তাদেরকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা, তাদেরকে নৈতিক শিক্ষায় বলিয়ান করা, বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মতো উপযোগী করার কাজগুলো তার দক্ষতার উপর নির্ভর করে। অথচ তাদের পেশাগতভাবে দক্ষ করার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার চেস্টাটা যেন দিল্লি দূর আস্ত হিসেবেই রয়ে গেল।

তাই সরকারের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি এ ব্যাপারে নুতন করে চিন্তা ভাবনা করার জন্য যাতে শিক্ষা ব্যবস্থা যুগোপযোগী হয় এবং শিক্ষকগণ ও এ পেশার প্রতি শতভাগ মনোযোগী হতে পারেন।

লেখক-
মহাসচিব
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading