ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে জানা যায়, হাসপাতালের আউটডোর, ইনডোর দন্ত বিভাগ, গাইনি বিভাগ ও নাক কান গলাসহ সব ক’টি বিভাগ বন্ধ রয়েছে।
অফিস নথিতে সাতজন ডাক্তার পোস্টিং থাকলেও কেউ অন ডিউটিতে আসছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এতে হাসপাতালের সরকারি অবকাঠামো, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি থাকা স্বত্ত্বেও কোনো উপকার আসছে না রোগীদের। ফলে উপজেলার বেশিরভাগ রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণের জন্য ছুটে চলেছেন জেলা শহরে।
মঙ্গলবার উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা দিনভর হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে ডাক্তার না থাকার বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন মহোদয়কে বারবার অবগত করেছি। এমনকি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সভায় হাসপাতালের সমস্যাগুলো তুলে ধরেছি, কিন্তু সমাধান পাচ্ছি না।’
শুধুমাত্র আউটডোরে একজন চিকিৎসক ডা. মতিন সাধারন রোগীদের চিকিৎসাপত্র দিচ্ছেন।
তিনি জানান, অফিস নথিতে তিনি উপজেলা পদ্মা নদী চরে চরঝাউকান্দা ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকে পোস্টিংরত। কিন্ত উক্ত কমিউনিটি ক্লিনিকটি পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার কারণে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসে ডিউটি সারছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩টি ডাক্তার পদের মধ্যে বর্তমান পোস্টিংরত রয়েছেন ৭জন চিকিৎসক। এদের মধ্যে ডেপুটেশনে আছেন দুইজন ডাক্তার। বাকি পাঁচ জন ডাক্তারের মধ্যে অনুপস্থিত রয়েছেন চারজন চিকিৎসক। এরা হলেন- আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার ডা. রেজাউল করিম, দন্ত বিভাগের চিকিৎসক ডা. আইরিন সুলতানা ও গাইনী বিভাগের চিকিৎসক ডা. রেদওয়ানা পারভীন।
হাসপাতালে সেবা গ্রহণকারী রোগীরা এসব পোস্টিংরত চিকিৎসকদের কোনোদিন দেখেন নাই বলেও জানান।
হাসপাতালের ভর্তি জব্বার বেপারী (৪৫) নামে এক রোগী বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে শুধু একজন ডাক্তার রোগী ওয়ার্ডে এসে ঘুরে যান। এছাড়া অন্য কোনো ডাক্তারদের আমরা দেখি নাই। এ হাসপতালে জ্বর, ব্যাথা, গ্যাস্ট্রিক ও কাটা ফাটাসহ সাধারন রোগীরাই চিকিৎসা নিতে আসেন। ডাক্তার সংকটে মরণঘাতি কোনো রোগের চিকিৎসা সেবা এ হাসপাতালে দেয়া হয় না।’
এ ব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাতজন ডাক্তার পোস্টিং আছে। এদের মধ্যে ডেপুটেশনের আছেন দুইজন ডাক্তার। বাকি পাঁচজন ডাক্তার নিয়মিত ডিউটিতে আসেন না। কিন্তু কর্তব্যহীন ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো ক্ষমতা আমার নেই। আমি শুধু উর্ধ্বতনদের ডাক্তার উপস্থিতির বিষয়টি জানাতে পারি।’
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.