"২০০তম" লাইভ ক্লাসের মাইলফলক স্পর্শ
মো: মোজাহিদুর রহমান।।
করোনাকালীন সময়ে সকল প্রতিকূলতাকে পেছনে ঠেলে নিজ দ্বায়িত্ব বোধ থেকে অনলাইন পাঠদানে "২০০তম" লাইভ ক্লাসের মাইলফলক স্পর্শ করেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার "৯১নং বেরকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়" এর প্রধান শিক্ষক মোসাঃনাসরীন আক্তার বীনা।
১৬ই মার্চের পর বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় কোভিড-১৯ এর কারনে । এরপর প্রায়শই বিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার খোঁজ নিয়েছেন তিনি। বাকি সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রেখেছেন । তারপরেও তার মনে হচ্ছিলো পুরোপুরি দ্বায়িত্ব ,কর্তব্য পালন করতে ব্যার্থ হচ্ছেন তিনি।
তার বিদ্যলয়টি গ্রামে অবস্থিত হওয়ায় নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করাও ছিলো কষ্টসাধ্য বিষয় । তার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেস্টা তিনি করেছেন শুরু থেকেই যেন শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন না হয়ে যায়।
ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অনলাইন স্কুলের কার্যক্রম শুরু হয়েছে সারা দেশে । বিভিন্ন পারিবারিক সমস্যাকে কাটিয়ে “2 Jun Kurigram Online school" এ প্রথম লাইভ ক্লাস শুরু করেন । এরপর “Barishal online school ” “ঘরে বসে শিখি “ “Learning BEE” "Bandarban online school " "বাংলাদেশ আলোকিত প্রাথমিক শিক্ষক " "Bangladesh online primary school " "PECE"সহ ১৪ টি পেজে নিয়মিত লাইভ ক্লাস উপস্থাপন করেন । জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বাবা,মা ও একমাত্র মেয়ে একই সাথে করোনা পজেটিভ হয় । বাবার ফুসফুস ২৪% আক্রান্ত হয় । এমন পরিস্থিতিতে ৩দিন পাঠদান বন্ধ রেখে ,পুনরায় তাদের সেবা করার পাশাপাশি পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
আগষ্টের ৩ তারিখে মোটরবাইক দূর্ঘটনায় পায়ে প্রচন্ড আঘাত পেয়ে ২০ দিন ব্যান্ডেজ করে রাখতে হয় বাম পা । তারপরও তিনি পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করেননি । যেহেতু বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানোর সুযোগ নেই তাই শিক্ষক হিসেবে নিজের দায়বদ্ধতা থেকেই সকল প্রতিকুল পরিবেশের মাঝেও চেষ্টা করেছেন কিছুটা হলেও নিজের দ্বায়িত্ব পালন করতে। তার একটি ক্লাসে যদি দেশের একজন শিক্ষার্থীও উপকৃত হয় সেটিই তার সার্থকতা বলে তিনি মনে করছেন । এই নিবেদিত শিক্ষকের ৫ ডিসেম্বর " ২০০ তম" লাইভ ক্লাস সম্পন্ন হয়েছে।
ঝালকাঠি সদর উপজেলায় প্রাথমিক স্তরে প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি অনলাইন ক্লাস শুরু করেন এবং তিনি প্রথম "২০০ তম" লাইভ ক্লাসের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
এইসকল নিবেদিত শিক্ষকদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে আমাদের আগামীর শিক্ষা কার্যক্রম। তার সাফল্য ও সুস্থতা কামনা করছি।