তাপপ্রবাহে হিমালয়ে গলছে বরফ, আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে তিস্তা পারের বাসিন্দাদের
সুভাষ বিশ্বাস, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ তীব্র তাপ প্রবাহে ভারতের হিমালয় পর্বতের জমাট বাঁধা বরফ গলতে শুরু করেছে। বরফগলা পানি ভারতের গজলডোবা বাঁধ হয়ে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করছে।তীব্র গরমে হিমালয়ের বরফগলা পানি পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন এ এলাকার বাসিন্দারা। শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার বুক ভরে থাকে ধু ধু বালুচরে।
তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে। যে পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশিরভাগ সময় এ দেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। যার পরিমাণ ৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে।
তীব্র গরম আর তাপপ্রবাহে তিস্তাপাড়ে এবার সেচনির্ভর কৃষকেরা হিমালয়ের বরফ গলা পানি পেয়ে মুখে ফুটিয়েছেন হাসি।
এ ছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বৃষ্টির পানিও আসছে তিস্তায়, ফলে এটা তিস্তার সেচ এলাকায় (রংপুর-বগুড়া-দিনাজপুর-নীলফামারী) অংশে কৃষকের জন্য ফসল উৎপাদনে আশীর্বাদে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল মাসে তিস্তায় পানি থাকে আড়াই থেকে ৩ হাজার কিউসেক। এবার পানি পাওয়া যাচ্ছে ৬ হাজার কিউসেকের ওপরে। ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহ গড়ে ২ লাখ কিউসেক থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে গড়ে থাকে ২ হাজার কিউসেক। তবে কোনো কোনো সময় তা নেমে আসে ৫০০ কিউসেকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদদৌলা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ বছর সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার হেক্টর।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, হিমালয়ের বরফগলা পানি তিস্তায় প্রবেশ করায় সন্তোষজনক পানি পাওয়া যাচ্ছে। সেচের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা পূরণ হয়েছে। নদীতে পানি কম থাকলেও সেচের ক্যানেলগুলোয় পর্যাপ্ত পানি রয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৪/০৫/২০২৪