অবসরের টাকা পাচ্ছেন না ৩৫ হাজার শিক্ষক
বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরেও অবসর সুবিধার টাকা তুলতে পারছেন না ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষক। জীবন সায়াহ্নে এসে নিজেদের চাঁদার টাকায় জমানো এ অবসর সুবিধা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
জরুরি চিকিৎসাটুকুও করাতে পারছেন না। ধুঁকে ধুঁকে মারাও গেছেন অনেকে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড বলছে, সব আবেদন নিষ্পত্তি করতে প্রয়োজন সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা।
দিনাজপুরের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আবুল বাশার মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সময় সংবাদের কাছে তুলে ধরেন তার কষ্টের কথা।
হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে জবুথবু হয়ে এসেছেন রাজধানীর পলাশীর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডে। বয়স ৭০ ছুঁইছুঁই। অবসর সুবিধা না পাওয়ায় পাঁচ বছর ধরে টাকার অভাবে বন্ধ নিজের এবং স্ত্রীর চিকিৎসাসেবা বলে জানান তিনি।
শুধু মোমেনই নন, প্রতিদিন সারা বাংলাদেশ থেকে অবসর ভাতার খোঁজে কয়েকশ শিক্ষক আসেন এ প্রতিষ্ঠানে। বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মিলছে না সমাধান। মানুষ গড়ার কারিগর অবসরপ্রাপ্ত এসব শিক্ষকের অনেকেই অসুস্থ হয়ে ভর্তি হাসপাতালে আছেন, অনেকেই পাড়ি জমিয়েছেন পরপারেও বলেও জানা গেছে।
বোর্ডের ফান্ডে শিক্ষকদের প্রদত্ত চাঁদা দিয়ে প্রতিমাসে জমাকৃত আবেদনের অর্ধেক নিষ্পত্তি করতেই হিমশিম খেতে হয়। তাই বিশেষ অনুদান ছাড়া কোনোভাবেই এসব আবেদন নিষ্পত্তি সম্ভব নয় বলে দাবি বোর্ডের।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহম্মেদ সাদী বলেন, বর্তমানে অর্থের অভাবে ঝুলে আছে ৩৫ হাজারের বেশি অবসর সুবিধার আবেদন, যা নিষ্পত্তি করতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন।
এ ছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটাল করার পাশাপাশি অবসর নামে নতুন অ্যাপ চালু করেছে অবসর সুবিধা বোর্ড বলেও জানান তিনি।