সেই দুই অখ্যাত লেখকের চারটি বই কেনার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। এসব লেখকের বই কেনার নিদের্শনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা উঠায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ডিপিই থেকে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, মৌসুমী মৌ নামের একজন অখ্যাত লেখিকার তিনটি ছড়াগ্রন্থ ও আরেকজন নামধারী কবির একটি বই বাধ্যতামূলকভাবে কিনে সংরক্ষণ করতে সরকারের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালকরা চিঠির মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়ার পরপরই সমালোচনা শুরু হয়।
গত ৭ জুলাই এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনায় বলা হয়, অখ্যাত লেখক কুমার সুশান্তের বই ‘অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধু সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ’ (পার্ল পাবলিকেশন্স) এবং কবি মৌসুমী মৌ (ছড়াকার) রচিত বাংলা ছেড়ে ভাগ (ছড়াগ্রন্থ), রামছাগলের পাঠশালা (ছড়াগ্রন্থ, জিনিয়াস পাবলিকেশন্স) এবং জাগরণ আসবেই ( ছড়াগ্রন্থ, শিশুরাজ্য প্রকাশনা) গ্রন্থগুলো যাচাই-বাছাই করে শিশুদের মেধামনন বিকাশের উপযোগী বইগুলো স্কুল লাইব্রেরিতে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।
অনুমোদনের পর থেকেই এ চারটি বই নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। বিশেষ করে অখ্যাত-অপরিচিত লেখকের বাহারি নামের নিম্নমানের বই অনুমোদনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠে। খোদ প্রকাশনা জগৎ থেকে অভিযোগ উঠতে থাকে, এই বই অনুমোদনের নেপথ্যে রহস্যজনক কার্যকলাপ আছে।
ডিপিই সূত্র জানায়, উল্লেখিত চার বইয়ের মধ্যে কবি সুশান্ত সরকার রচিত অসম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধু সম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং মৌসুমী মৌ (ছড়াকার) রচিত বাংলা ছেড়ে ভাগ (ছড়াগ্রন্থ) ও রামছাগলের পাঠশালা গ্রন্থগুলো নিয়ে বেশি সমালোচনা হয়। এসব বইয়ের বার্তা শিশুমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া এ ধরনের বই কেনার নামে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে অযথাই লাখ লাখ টাকা পাইয়ে দেয়ার মানসিকতা নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
এমন পরিস্থিতি ১১ সেপ্টেম্বর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধাকরদের। এরপর উল্লেখিত নির্দেশনা বাতিল করা হয়। বাতিল সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, গত ৭ জুলাই দেয়া পত্রে নির্দেশনার কার্যকারিতা বাতিল করা হল। বিষয়টি অধিদফতরের মহাপরিচালক অনুমোদন করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ এফ মনজুর কাদির বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠিতে এ দুই লেখকের বইগুলো বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষণ করা যায় কি না, তা যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশনা দেয়া হয়। তার ভিত্তিতে আমরা একটি ফাইল তুলি। এছাড়াও লেখকরা তাদের লেখার উৎসাহ প্রদানে অনুরোধ করায় আমরা জেলা-উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছিলাম। মাঠ পর্যায়ে থেকে বইয়ের মান নিয়ে নেতিবাচক প্রতিবেদন আসার পর আগের চিঠি বাতিল করেছি।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.