শূন্যপদে আরো পাঁচ হাজার নিয়োগ দেবে সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সিনিয়র কর্মকর্তা, কর্মকর্তা ও কর্মকর্তা ক্যাশ পদে চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে জনবল নিয়োগের চাহিদাপত্র পাওয়ার পর ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয় (বিএসসিএস) এই উদ্যোগ নেয়। আশা করা হচ্ছে, খুব দ্রুতই এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। নিয়োগে প্রার্থী বাছাইয়ের তিন ধাপ নৈর্ব্যক্তিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই চাকরির চূড়ান্ত সুপারিশ পাবেন। প্রক্রিয়াটি শেষ করে চাকরির চূড়ান্ত সুপারিশ পেতে অন্তত দুই বছর সময় লাগবে।
এর আগে ২০১৭ সালে এসব ব্যাংকে সাত হাজারের বেশি চাকরিপ্রত্যাশী নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছিলেন। সব প্রক্রিয়া শেষ করে শিগগিরই তাঁরা চাকরিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন। আর ২০১৮ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। সেখানেও চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়া চার হাজারের বেশি চাকরিপ্রত্যাশী নিয়োগ পাবেন।
সূত্র জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত ১২টি ব্যাংক ও দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নতুন করে জনবল নিয়োগ দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে এবার চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে আবেদনে ২০০ টাকা করে ফি নেওয়া হবে। আগের বিনা মূল্যে আবেদনের সুযোগ এবার থাকছে না।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত অপচয় রোধে এই ফি নেওয়া হবে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় ফি নেওয়া হবে, সেটি নির্ধারণ করতে কয়েক মাস লেগে গেছে। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেটের মাধ্যমে এই ফি নেওয়া হবে। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পরই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয় সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে চাহিদাপত্র পাওয়া গেছে। চাহিদা অনুযায়ী পাঁচ হাজারের বেশি পদে দ্রুততম সময়ে সিনিয়র কর্মকর্তা, কর্মকর্তা ও কর্মকর্তা ক্যাশ পদে আলাদা সমন্বিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
বিএসসিএস চলতি বছরের শুরুতে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরিকল্পনা নিলেও চাকরিপ্রত্যাশীদের একটি অংশের রিট আবেদনের কারণে ২০১৭ সালের সিনিয়র কর্মকর্তা, কর্মকর্তা ও কর্মকর্তা ক্যাশ পদের ফল প্রকাশ নিয়ে জটিলতায় সেটি হয়ে ওঠেনি। তবে এরই মধ্যে ২০১৭ সালের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হওয়ায় সে জটিলতার নিরসন হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এবং সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশে (আইসিবি) নিয়োগে প্যানেল সুপারিশ করে সিলেকশন কমিটি।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চাহিদাপত্র : প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগ দিতে ব্যাংকার্স কমিটি সচিবালয়ে চাহিদাপত্র পাঠায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সব ব্যাংকের পৃথক চাহিদাপত্র একত্র করে সমমানের পদে নিয়োগ দিতে একসঙ্গে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থী বাছাইয়ে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডার দেওয়া হয়। তারা নৈর্ব্যক্তিক ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা পাঠায় ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ে। এই ফল পাওয়ার পর পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংকে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল একত্র করে চূড়ান্ত উত্তীর্ণদের ফল প্রকাশ করা হয়।
রকেটের মাধ্যমে নেওয়া হবে আবেদন ফি : সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির নিয়োগে বিনা মূল্যের আবেদনে এবার ২০০ টাকা ফি নেওয়া হবে। চাকরিপ্রত্যাশীর আবেদনের এই ফি দিয়ে নিয়োগপ্রক্রিয়ার ব্যয় নির্বাহ করা হবে। এত দিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে অর্ধেক খরচ জোগান দিত বাংলাদেশ ব্যাংক আর অর্ধেক সংশ্লিষ্ট ব্যাংক।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়ের সহমহাব্যবস্থাপক আরিফ হোসেন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখন আবেদনে প্রত্যেককে ২০০ টাকা করে ফি দিতে হবে। দেখা গেছে, যত প্রার্থী আবেদন করে তার এক-তৃতীয়াংশও পরীক্ষায় বসে না। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়। সত্যিকারের আগ্রহী প্রার্থী বাছাই করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.