আয়তনের দিক দিয়ে অধিক জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা।যে হারে বাড়ছে জনসংখ্যা সে হারে বাড়ছে না কর্মসংস্থান।
২০১৮ সালে একটি প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশে প্রকৃত কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ৪ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার যদিও আন্তজার্তিক শ্রম সংস্থা ( আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী এদের বেকার বলা হয় না ঐ প্রতিবেদনে বেকার বলা হচ্ছে ২৬ লাখ ৮০ হাজার।
আইএলও এর আরেকটা প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চশিক্ষিত বেকারত্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।
এদিকে চাকরির বিজ্ঞপ্তি গুলোতে শূন্য পদের সংখ্যা হাতে গোনা,সেই তুলনায় চাকরি প্রার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি।
সাম্প্রতিক সময়ে NSI নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদের সংখ্যা ছিলো ১৩৯৪ টি আর চাকরির আবেদন পড়ে ৪ লাখ ৪৯৬৮৯ টি,যা রেকর্ড সংখ্যক।
কিছুদিন আগে খাদ্য অধিদপ্তরে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদ সংখ্যা ছিলো ১১৬৬ টি আর এর বিপরীতে আবেদন পড়ে ১৩,৭৮,০০০ টি।যেখানে প্রতি পদের বিপরীতে আবেদন করেছেন ১১৮২ জন।
বোঝাই যাচ্ছে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হলে পদের বিপরীতে আবেদন পড়ে অনেক বেশি। আর এই সুযোগে চাকরিদাতারা হাতিয়ে নেয় অনেক টাকা।
প্রায় ক্ষেত্রে আবেদন ফি দেখা যায় ৩০০ থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।
NSI সহকারী পরিচালকের আবেদন ফি ছিলো ৭০০ টাকা।
ফিল্ড অফিসারে আবেদন ফি ছিলো ৫০০ টাকা।
শূন্য পদের সংখ্যা উল্লেখ না থাকা সত্বেও West zone power distribution company limited এর আবেদন ফি ছিলো ১০০০ টাকা।
আবেদন ফি যদি হয় ১০০০ টাকা এরমধ্যে আনুষঙ্গিক খরচ হয় ২০০ টাকা।তাহলে মোট আবেদন বাবদ খরচ হয় ১২০০ টাকা।
এসব দেখে মনে হয় চাকরির আবেদন ফি যেন সরকারের রাজস্ব আদায়ের অন্যতম উৎস।
চাকরির আবেদন ফি এতো টাকা নেওয়ার কারণ হিসেবে নিয়োগকর্তারা দেখায় নিয়োগ সংক্রান্ত খরচ।
নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন সহ আনুষঙ্গিক কাজে খরচ হবে ব্যাপারটা স্বাভাবিক কিন্তু এখরচ কেন বেকারদের কাঁধে পড়বে?
প্রতিষ্ঠান তাদের প্রয়োজনে নিয়োগ দেয় সেজন্য সেই খরচ তাদেরই বহন করা উচিত। অথচ সেই খরচ নেয়া হয় চাকরি প্রার্থী থেকে।
একজন বেকার হিসেবে এই আবেদন ফি এর টাকা জোগাড় করা যে কতটা কষ্টের তা কেবল তারাই জানে।
যেখানে বেকারত্ব পরিবার এবং সমাজের জন্য বোঝা সেখানে আবেদন ফি আরও অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়ায় একজন বেকারের কাছে।
এমতবস্থায় চাকরি প্রার্থীরা মনে করে চাকরিতে আবেদন ফি কমানো উচিত এবং সেটাকে সহনীয় পর্যায়ে আনা উচিত।এজন্য তারা সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করে।
লেখক
আবু হানিফ
যুগ্ম আহ্বায়ক
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.