রংপুরঃ টানা তিন দিন আন্দোলনের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি আংশিক প্রত্যাহার করেছেন রংপুরের কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
আন্দোলনের চতুর্থ দিনে আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে কলেজ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ৩৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে তাঁরা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে বেলা ১১টার দিকে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ফয়সাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে আসেন ৭২ পদাতিক ডিভিশনের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম। তাঁরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা কলেজের সার্বিক বিষয় ও এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র বিবেচনা করে কর্মসূচি কিছুটা শিথিলতার দিকে যাচ্ছি। এ সময় এইচএসসি পরীক্ষা, অনার্স ও মাস্টার্সের ভর্তি কার্যক্রম চলমান থাকবে। তবে কর্মসূচি এখানেই সমাপ্ত নয়, যদি আমাদের সঙ্গে কোনোভাবে টালবাহানা করা হয় এবং দাবি পূরণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সময়ক্ষেপণ করা হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে রংপুরকে অচল করে দেওয়া হবে।’
শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবিগুলো হলো—কলেজের সব খাতে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি, নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মানসম্মত অডিটরিয়াম নির্মাণে পূর্ণ বরাদ্দ নিশ্চিত, কলেজের দখলকৃত জমি উদ্ধার এবং কলেজ চত্বরে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে রাস্তা প্রশস্তকরণ ও সৌন্দর্যবর্ধনমূলক গেট নির্মাণ, কলেজের জমি অন্য কোথাও না দেওয়ার লিখিত নিশ্চয়তা, হলসংখ্যা বৃদ্ধি এবং পুরোনো হলগুলোর সংস্কার, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য অন্তত ছয়টি বাস সরবরাহ, প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ স্মার্ট ক্লাসরুমে রূপান্তর, কলেজে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, বিজ্ঞান বিভাগের জন্য আধুনিক ল্যাবরেটরি ও উন্নত সরঞ্জাম প্রদান।
এ বিষয়ে কলেজটির অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেটুকু চান, তার বিন্দুমাত্র চাওয়া আমাদের কম নয়। দাবি পূরণের জন্য শিক্ষার্থীরা একটি টাইমলাইন দিয়েছেন, সেই কাগজ লিখিতভাবে আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করেছি। কলেজের শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি তুলেছেন, সেগুলো পূরণ করা হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি ছিল শিক্ষা উপদেষ্টার কারমাইকেল কলেজে উপস্থিতি। আজ সকালে পরীক্ষা সচিবের মাধ্যমে উপদেষ্টার বার্তা পাওয়া গেছে। কলেজের অধ্যক্ষ ও পাঁচ ছাত্রপ্রতিনিধির সঙ্গে বসে তাঁদের দাবিদাওয়া ও সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন উপদেষ্টা।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ৩০ জুনের মধ্যে দখলদারেরা সরে না গেলে ১ জুলাই তাঁদের উচ্ছেদ করা হবে। কলেজের অভ্যন্তরে যেসব রাস্তা আছে সেগুলো সিটি করপোরেশন অথবা শিক্ষাকৌশল বিভাগ থেকে নির্মাণ করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৫/০৬/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.