ঢাকাঃ একদিন আগেও কপালে চিন্তার ভাঁজ ছিল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের। ঈদের আগে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও বোনাস পাওয়া নিয়েও ছিল চরম অনিশ্চয়তা। এমনকি সরকার শুক্রবার (২৮ মার্চ) ব্যাংক খোলা রেখে বেসরকরি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের ঘোষণা দেওয়ার পরও ছিল সংশয়।
সব সংশয় কাটিয়ে অবশেষে বেতন ও বোনাসের টাকা তুলতে পেরেছেন এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের সাড়ে তিন লাখেরও বেশি শিক্ষক-কর্মচারী। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদের উৎসবভাতার টাকা তুলেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। যদিও বেতন-বোনাসের টাকা তুলতে তারা মাত্র দুই ঘণ্টা সময় পেয়েছেন।
তবে অনেকে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এখনো বেতন ঢোকার মেসেজ পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। তারপরও বিশেষ ব্যবস্থায় ঈদের আগে অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা দেওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তারা। তবে চলতি মার্চ মাসের বেতন ঠিক কবে নাগাদ তারা পাবেন, তা নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষক-কর্মচারীরা বলছেন, ঈদের দুইদিন আগে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। মার্চের বেতন কবে পাবেন তার নিশ্চয়তা নেই। শিক্ষক-কর্মচারীদের ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে বেতন-ভাতা দিতে ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।
নিয়মিত বেতন পরিশোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে ঈদের পর ১০ এপ্রিলের মধ্যে মার্চ মাসের বেতন দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন প্রায় চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারী।
আব্দুল আলীম নামে এক শিক্ষক বলেন, ইএফটিতে বেতন চালুর পর থেকে নানান ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এক মাসের বেতন আরেক মাসে নিতে হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির বেতন আজ হাতে পেলাম। জানি না মার্চ মাসের বেতন কবে পাবো। শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে এ তামাশা বন্ধ হওয়া জরুরি।
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হতো। এ অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। গত ১ জানুয়ারি এক লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন।
দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার এবং চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এর অধিক শিক্ষক-কর্মচারীকে ডিসেম্বর মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তারা জানুয়ারি মাসের বেতনও পেয়েছেন। তাদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদ উৎসব ভাতা আজ শুক্রবার তুলতে পেরেছেন।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.