রাজশাহীঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজলা গেইটে শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোয় ইংরেজি বিভাগের আরেকজন শিক্ষার্থীকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে এ হেনস্তার ঘটনা ঘটে। হেনস্তাকারী ব্যক্তির নাম তন্ময় বলে জানা যায়। রাবি ক্যাম্পাস সংলগ্ন হ্যাট্রিক ক্যাফের মালিক তন্ময়ের বাড়ি রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার আমজাদের মোড় এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে কাজলা গেইটে ইংরেজি বিভাগের একজন নারী শিক্ষার্থী হ্যারাসড হন। এ সময় তার সাথে থাকা ইংরেজি বিভাগের আরেকজন শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে হাতাহাতির সূত্রপাত হয়। একপর্যায়ে দুজনই শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হন।
ঘটনা চলাকালীন ফেসবুকে লাইভ করেন ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ফারহান মাহমুদ। ফারহানের লাইভ ভিডিওর সূত্র ধরে নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করেন শিক্ষার্থীরা।
লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত তন্ময় এক নারী শিক্ষার্থীকে মারতে উদ্যত এবং রিকশা করে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে হেনস্তাকারী যুবক তন্ময় রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহানের দিকে তেড়ে আসেন এবং এরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারহান বলেন, ‘আমি আমার বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে কাজলা গেইটে বাজার করছিলাম। এমন সময় আমার সাথে থাকা বান্ধবীকে টিজ করেন এক যুবক। আমরা প্রতিবাদ করায় তন্ময় নামের ছেলেটি আমার ও আমার বান্ধবীর ওপর চড়াও হয় এবং আমরা শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হই।’
এরপর ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী একত্র হন। ফারহান বলেন, ‘একপর্যায়ে ছেলেটি আমাকে এবং আমার বান্ধবীকে আবার মারধর করার জন্য তেড়ে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নারী শিক্ষার্থীকে এভাবে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনায় বিস্মিত! আমরা মামলা করেছি। সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।’
এ ঘটনার বিচার চেয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফেরদৌস মিনার বলেন, ‘আজকে দুপুরে কাজলা গেইটে আমাদের সহপাঠীর সাথে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটল; যেভাবে একজন ছেলে ও একজন মেয়েকে ফিজিক্যালি হেনস্তা করা হলো, এতে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে সন্দিহান। আমরা পুলিশকে সেই কালপ্রিটের নাম, পরিচয়, ঠিকানা, ফেইসবুক আইডি এবং তার ছবি দিয়েছি এবং আশা করি তাকে আজকে রাতের মধ্যেই গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পরপরই আমার পুরো প্রক্টোরিয়াল বডিকে সেখানে পাঠাই। আরও কয়েকজন শিক্ষকও ছিলেন। আমি মতিহার থানার ওসিকেও বিষয়টি ইনফর্ম করি। আমরা চাই, অভিযুক্ত এই ছেলেটিকে যেন দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে এসে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেইটের সামনে আজকে দুপুরের একটি ঘটনার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১২/০৩/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.