নিজস্ব প্রতিবেদক।। দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭০ নম্বর পেয়েও সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন হাজারও শিক্ষার্থী।
ভর্তি পরীক্ষায় ৪১ নম্বর থেকে ৪৬ নম্বর পেয়েও প্রায় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সংরক্ষিত কোটার ম্যারপ্যাঁচের কারণে অনেক বেশি নম্বর পেয়েও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর মেডিকেল কলেজে পড়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজন ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন, তাদের প্রাপ্ত নম্বর কত—সেগুলো খোঁজ নিতে হবে। এরপর বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যাবে।
এদিকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতি বহাল রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা কলেজ শাখা। একইসঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোটায় ভর্তিতে সুযোগ পাওয়া সব ফল বাতিল করে পুনরায় ফল প্রকাশের দাবি জানান তারা।
রোববার রাত সাড়ে ১০টায় কলেজটির উত্তর ছাত্রাবাসের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এরপর বিক্ষোভ মিছিলটি কলেজ থেকে বেরিয়ে মিরপুর সড়কের সায়েন্সল্যাব-নীলক্ষেত মোড় ঘুরে ঢাকা কলেজের মূল ফটকে এসে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘ওয়াসিম-সাইদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘চব্বিশের বাংলায়, কোটা প্রথার ঠাঁই নাই’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘মেডিকেলে কোটা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘হলে হলে খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, এখনো কোটার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে সুযোগ দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। এ কোটাকে কেন্দ্র করেই অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে। কোনোভাবেই এই বৈষম্য মেনে নেওয়ার মতো নয়।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার আহ্বায়ক আফজাল হোসেন বলেন, আজকে মেডিকেলের ফল প্রকাশিত হয়েছে। পতিত স্বৈরাচার সরকারের মতো ছাত্রজনতার সরকারও সেই কোটা বহাল রেখেছে। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় অনেকে কোটায় ৪১ পেয়ে চান্স পেয়েছে অথচ ৭৫ নম্বর পেয়েও অনেকেই চান্স পায়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের দাবি, অতি শিগগিরই এই কোটা প্রথা বাতিল করতে হবে। নতুন করে রিভিউ ফল প্রকাশ করতে হবে।
এবার ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য ৫ হাজার ৩৭২ জন পরীক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। রোববার বিকেল ৪টার পর এ ফল প্রকাশ করা হয়।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বর ৪০। অংশগ্রহণকারী ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পাশের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলে পরীক্ষার্থী ছিল ২২ হাজার ১৫৯ জন যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৩৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। উত্তীর্ণ মেয়ে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৩৭ হাজার ৯৩৬ জন যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৬৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত সর্বোচ্চ নম্বর ৯০ দশমিক ৭৫।
শিক্ষাবার্তা /এ/২০/০১/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.