নিজস্ব প্রতিবেদক।। বিগত ১৫ বছরে জনপ্রশাসনে বঞ্চিত ৭৬৪ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে এ সংক্রান্ত কমিটি। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে এসব কর্মকর্তাকে পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব কর্মকর্তা নিজেদের বঞ্চিত দাবি করে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এই সুপারিশ করেছে কমিটি। ১ হাজার ৫২৭টি আবেদন যাচাইবাছাই করে উল্লিখিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতির এই সুপারিশ করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, জনপ্রশাসনে পদোন্নতিবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাঁদের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন। প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদনটি পেশ করেন কমিটির প্রধান জাকির আহমেদ খান। এ সময় কমিটির অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, কমিটির সুপারিশে, সচিব পদে ১১৯, গ্রেড-১ (সচিব মর্যাদা) পদে ৪১, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮, যুগ্মসচিব পদে ৭২ এবং উপসচিব পদে চার কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি প্রদান করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা ৭৬৪ কর্মকর্তার মধ্যে ৯ কর্মকর্তাকে চার ধাপ, ৩৪ কর্মকর্তাকে তিন ধাপ, ১২৬ কর্মকর্তাকে দুই ধাপ এবং ৫৯৫ কর্মকর্তাকে এক ধাপ পদোন্নতির সুপারিশ করেছে কমিটি। তবে আবেদনকারীদের মধ্যে ৭৬৩ কর্মকর্তাকে পদোন্নতির সুপারিশ করেনি কমিটি। একটি সূত্র জানায়, তাঁদের কেন পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়নি তার সুনির্দিষ্ট কারণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্রটি আরও জানায়, কমিটির পক্ষ থেকে শুধু ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তাকে প্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে পদায়ন করা হবে কি না তা নিয়ে এ কমিটি কোনো সুপারিশ করেনি।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর সাবেক অর্থ সচিব এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থবিভাগ এবং আইন ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি ছিলেন।
কমিটির কাছে ১ হাজার ৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল, যার মধ্যে মারা যাওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের করা ১৯টি আবেদন ছিল। এর মধ্যে ১৩টি আবেদন নানা কারণে কমিটির আওতার বাইরে ছিল। বাকি ১ হাজার ৫২৭টি আবেদন যাচাইবাছাই করে সুপারিশ তৈরি করে কমিটি। এই আবেদনগুলো যাচাইবাছাই করার জন্য গঠিত কমিটি ২৮টি সভা করে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুপারিশ প্রণয়ন করে। এরপর গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হয়। পদোন্নতির জন্য গঠিত কমিটিকে ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রতিবেদন পেশ করায় কমিটির সদস্যদের প্রধান উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানান। প্রতিবেদনটি পেশ করার সময় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষাবার্তা /এ/১১/১২/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.