এইমাত্র পাওয়া

‘দুর্নীতির বরপুত্র’ ডিপিডিসির সহকারী প্রকৌশলী অভিজিৎ দেওয়ানজি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এর কর্মকর্তা অভিজিৎ দেওয়ানজির বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ায় গেছে। অভিজিৎ দেওয়ানজি বর্তমানে রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র  বংশাল এনওসিএস বিদ্যুৎ অফিসে ডিপিডিসির সহকারী প্রকৌশলী।  তার পদকে দুর্নীতির হাতিয়ার বানিয়ে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। গ্রাহকদের হয়রানি, টাকা ছাড়া ফাইল না ছাড়া, কাগজপত্রে ঘাটতি না থাকলেও নানা সমস্যা দেখিয়ে অর্থ আদায় করাসহ একাধিক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।  ভুক্তভোগী কয়েকজন তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক চোরা লাইন বাণিজ্য, বৈদ্যুতিক মিটার বাণিজ্য, মিটার ছাড়া লাইন দিয়ে বিদ্যুতের চোরাচালান ও গ্রাহকদের সঙ্গে অসদাচরণ সহ হাজারো অভিযোগ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। 

ডিপিডিসির সহকারী প্রকৌশলী অভিজিৎ দেওয়ানজি বংশালে এনওসিএস বিদ্যুৎ অফিসে যোগদানের পর  এক শক্তিশালী দুর্নীতির বলয় গড়ে তুলেন। অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ সহ গ্রাহকদের বিভিন্ন অযুহাতে টাকা দিতে   বাধ্য করেন। এতে যারা বাঁধা দিয়েছে তাদের সবার সাথেই খারাপ আচরণ বা অশালীন ব্যবহার করেন অভিজিৎ দেওয়ানজি।

তিনি একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার পৃষ্টপোষকতায় শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। বিভিন্ন দপ্তরে স্পেশাল ট্রাস্কফোর্স অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেই তার নলেজে আসার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তার দালাল চক্রের সদস্যরা দফারফা করে বিদ্যুৎ বিল ৬০/৭০ শতাংশ কমিয়ে জাতীয় রাজস্বসহ ডিপিডিসির রাজস্বের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। গ্রাহক প্রস্তাবে রাজী না হলে তাকে ২/৩ গুণ বেশি বিল করে দেন এবং বিভিন্ন  ভয় দেখান।

এমনও দেখা গেছে, বেশি বিল আসার পর গ্রাহক যখন অফিসে যোগাযোগ করে তখন গ্রাহককে বলা হয় বিল কমানোর জন্য আপনি একটি আবেদন করেন। পরবর্তীতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি করে প্রভাব খাটিয়ে বিল কমানো হয়ে থাকে এর বিনিময়ে পেয়ে থাকেন উৎকোচ ।

এর আগে বনশ্রী ডিভিশনে থাকা অবস্থায় বরখাস্ত হলেও লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে আবার আগের পদে পুনর্বহাল হোন। তিনি কোটি কোটি টাকা ভারতে পাচার করেন। বছরে ৩/৪ বার ভারত ভ্রমন করেন । তার পাসপোর্ট  এর তথ্য বিশ্লেষন করলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। এছাড়াও ঢাকার শহরে একাধিক ফ্লাটের সন্ধান পাওয়া গেছে।

শুধু বনশ্রী কিংবা বর্তমান বংশালেই এনওসিএস বিদ্যুৎ অফিসে নয় এই কর্মকর্তা যখন রাজধানীর মুগদায় ডিপিডিসির এনওসিএস বিদ্যুৎ অফিসে দায়িত্বে ছিলেন সেখানেও লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। সে সময়ে তার বিরুদ্ধে তদন্তও করা হয়। তদন্তে তার প্রমাণ মিললেও মোটা অংকের অর্থের মাধ্যমে সেই তদন্ত থেকে নিজেকে রক্ষা করেন তিনি। 

যে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হয়েছিল সেই অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী বাড়ির আয়তন সাড়ে ১২ হাজার বর্গফুট হলে অথবা ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ লাগলে নিতে হয় উচ্চ লোডের এস.টি সংযোগ। সব মিলিয়ে সরকারি খরচ পড়ে আনুমানিক ৪ লাখ টাকা। কিন্তু মুগদা বিদ্যুৎ অফিসে এই সংযোগ নিতে গ্রাহককে গুনতে হয় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা। আর তৎকালীন এই টাকা মুগদার ডিপিডিসির তৎকালীন সহকারী প্রকৌশলী অভিজিৎ দেওয়ানজি পকেটে যেত। 

ঐ অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মুগদা ডিপিডিসির আওতায় বাসাবোর কদমতলা এলাকার গ্রাহক গিয়াস উদ্দিনের বাড়ির আয়তন ১৬ হাজার ১২শ’ বর্গফুট। ২০১৮ সালে অস্বচ্ছলতার কথা উল্লেখ করে আবাসিক সংযোগের জন্য তৎকালীন ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক বরাবর দুই বছরের জন্য ভাড়ায় ট্রান্সফরমারের আবেদন করেন তিনি। ওই আবেদন মঞ্জুর করা হয় (যার নম্বর ৪২৫০)। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত প্রতি মাসে সাড়ে ৭ হাজার টাকা করে ট্রান্সফরমার ভাড়া দেন তিনি। দুই বছরের চুক্তিতে টানা ২০ মাস পরিশোধের পর সেপ্টেম্বর মাসে হঠাৎ করেই ভাড়া মওকুফ করে দেয় ডিপিডিসি। এ ক্ষেত্রে নিয়ম ভেঙে সরকারের রাজস্ব ফাঁকিতে সহায়তার অভিযোগ উঠে ডিপিডিসির এনওসিএস মুগদা কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী অভিজিৎ দেওয়ানজির বিরুদ্ধে।   এ  বিষয়টি জানার পর নড়েচড়ে বসে ডিপিডিসি কর্মকর্তারা। শুরু হয় তদন্ত। তদন্তে মেলে অভিজিৎ দেওয়ানজির সংশ্লিষ্টতা। তবে তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

বিদুৎ এর নতুন সংযোগ নেওয়ার জন্য যে গ্রাহকের সোলার প্রয়োজন হয় সেই গ্রাহক তার নিজস্ব লোক নিয়োগ দেওয়া আছে তার নাম দিলিপ তার কাছ থেকে সোলার না নিলে সেই গ্রাহকের কপালে নতুন সংযোগ জোটে না।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোলার লাগানোর কথা বলে টাকা নিয়ে সোলার লাগাই নাই এইভাবে লক্ষ লক্ষ  টাকা হাতিয়ে নেন। নতুন সংযোগ এর বেলায় তার নিজস্ব লোক নিয়োগ দেওয়া আছে তার নাম সজল বেপারী তার রেট করে দেওয়া আছে। গ্রাহক যদি রাজি না হয় তার কপালে বিদ্যুৎ এর নতুন সংযোগ জোটে না । সবার অফিস ৫টা পযন্ত আর তার অফিস শুরু হয় ৫টার পর থেকে। সকালে অফিসে এসে সাইডে বের হয়ে যান তারপর গ্রাহক আংগিনা পরিদর্শনের নামে গ্রাহকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা দেব জরিমানা বিল করবো এই আমার ভিজিটিং কাড ৫টারপর অফিসে আসেন তারপর দেনদরবার শুরু করেন।
 মিটারের কারচুপি এবং অথের সাথে জড়িত থাকার কারনে কোম্পানির সচিব দপ্তরের টাস্ক ফোর্সের টিম কতৃক ২৫/০৯/২০২৪ইং তারিখে কৈফিয়ত তলব করেন। কিন্তু  এখন পযন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

 ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এর মুগদা ও বনশ্রী এনওসিএস বিদ্যুৎ অফিসকে অনিয়মের আখড়া পরিণত করলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সর্বশেষ বংশাল অফিসকেও তিনি দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেন। 

এই বিষয়ে অভিজিৎ দেওয়ানজি বলেন, আমি চট্টগ্রামে আছি আপনার সাথে পরে কথা বলবো।

জানতে চাইলে ডিপিডিসির বংশাল অফিসের নিবার্হী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাহবুব হোসেন এর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

  শিক্ষাবার্তা ডটকম /এ/১০/১২/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.