এইমাত্র পাওয়া

শঙ্কায় ‘বই উৎসব’

নিজস্ব প্রতিবেদক।। নতুন বইয়ের গন্ধ মেখে আনন্দ-উৎসবে বছর শুরু হয় শিক্ষার্থীদের। এবারও ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দিতে কাজ করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বই ছাপার কাজে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কিছু বই পাঠানো শুরুর সময়ে এবার ছাপা চলছে প্রাথমিকের বই। মাধ্যমিকেরটা আরও পিছিয়ে। বই উৎসব তাই এবার কিছুটা শঙ্কায়।

এনসিটিবি দ্রুততম সময়ে বই ছাপানো শেষ করার চেষ্টার কথা বললেও ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৪০ কোটি ১৬ লাখ বই ছাপিয়ে তা স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেওয়াটা ‘পাহাড়সম’ কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা ঠিক কবে নাগাদ সব নতুন বই হাতে পাবে, তা নিয়েও নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছেন না খোদ এনসিটিবি কর্মকর্তারা। ফলে এবার বিবর্ণ হওয়ার শঙ্কায় ১ জানুয়ারির বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘বই উৎসব’।

বই ছাপার কাজে এবার ‘অতি দেরি’ হওয়ার পেছনে নিজেদের কোনো ‘দায়’ দেখছেন না এনসিটিবির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, পাঠ্যবই ছাপার কাজে এ বিলম্বের স্পষ্টই ‘সঙ্গত’ কারণ রয়েছে, যা শিক্ষার্থী-অভিভাবকরাও অবগত। বরং তাদের কর্মতৎপরতায় পাঠ্যবইয়ের বিপুল এ কর্মযজ্ঞ তুলনামূলক কম সময়ে শেষ করা সম্ভব হবে।

ছাপাখানায় প্রাথমিকের বই
২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৪০ কোটি ১৬ লাখ বই ছাপানোর কাজ করছে সরকার। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের বইয়ের সংখ্যা ১২ কোটি ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫২টি।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই ৯৮ লটে ছাপানো হবে, যার মধ্যে ৭০ লটের বই ৪১টি ছাপাখানায় পুরোদমে ছাপার কাজ চলমান। বাকি ২৮ লটের বই ২১ নভেম্বর সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। সেগুলোও দ্রুত ছাপার কাজ শুরু হবে।

এনসিটিবির উৎপাদন নিয়ন্ত্রক আবু নাসের টুকু জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রাথমিকের সব বই এখন পুরোদমে ছাপার কাজ চলছে। আশা করি, প্রাথমিকের সবকটি বই বছরের প্রথমদিনে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারবো।’এনসিটিবি সূত্র জানায়, মাধ্যমিকের কোনো শ্রেণির বই এখনো ছাপাখানায় পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে সব শ্রেণির বইয়ের টেন্ডার হয়েছে। মাধ্যমিকের বইয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো—ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ের টেন্ডারের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে অনুমোদন হলে বই ছাপার কাজ শুরু হবে। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শুরুতে হয়তো ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই ছাপাখানায় পাঠানো হতে পারে। অষ্টম-নবমের বই ছাপাখানায় পাঠাতে আরও দেরি হবে।

জানুয়ারির শুরুতে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে কিছু বই পৌঁছাবে। আর জানুয়ারি মাসের মধ্যেই সব বই আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে দিতে পারবো বলে বিশ্বাস করি। এটা করতে আমরা আমাদের কমিটমেন্ট ও ডেডিকেশনে কোনো ব্যত্যয় ঘটতে দেবো না। বাকিটা সময়ই বলে দেবে।- এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান

জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা যারা এখন কাজ করছি, তাদের অনেকে সেপ্টেম্বরের শেষে, অনেকে আবার অক্টোবরে দায়িত্বে এসেছি। অথচ প্রতিবছর এপ্রিল-মে মাস থেকে বইয়ের পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত ও টেন্ডারের কাজ শুরু হয়। এবার তা শুরু করতে হয়েছে বলা চলে অক্টোবরে। তাছাড়া শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন এসেছে, পাঠ্যবই পরিমার্জন-সংশোধন করতে হয়েছে। টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার দিতে হয়েছে। দেরি হওয়াটা খুবই সঙ্গত। তবে এটুকু আমি বলতে পারি, ধারণার চেয়ে কম সময়ের মধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পারবো।’

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এ/২৪/১১/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.