নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ফরিদপুরের সদরপুরে ড্রাগন চাষ করে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাফল্য অর্জন করেছেন। কয়েক বছর আগেও দেশের মানুষ জানত এটি বিদেশি ফল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে ড্রাগনের চাষ এতটা বেড়েছে যে, এখন এটি দেশি ফল বলেই মানুষের কাছে পরিচিতি।
জানা গেছে, সদরপুর উপজেলা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে আকোটের চরের ছলেনামা গ্রামে তরুণ এই দুই উদ্যোক্তা নিজেদের ড্রাগন ফলের বাগান করেছেন। তারা হলেন নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সাইফুল আদনান এবং ফরিদপুর টাইমস ইউনিভার্সিটির বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাকিব হোসেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তের বিঘা জমিতে দুই উদ্যোক্তার ড্রাগনের বাগান। সবুজ রঙের গাছে গাছে ঝুলছে ছোট-বড় ড্রাগন ফল। আবার কোনো গাছে ফুল আসছে। তারা ২০২১ সালে করোনাকালীন সময় থেকে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। ড্রাগনের পাশাপাশি লেবু, থাই পেয়ারা, আপেলকুলসহ এখানে নানান ধরনের ফলের বাগান আছে। এ ছাড়া বাগানে প্রচুর ফুল ও ফল হয়েছে। বাগানটি একনজর দেখতে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। অনেকেই পরামর্শ নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বাগান করতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, করোনার সময় ঘরে বসে না থেকে বাগান করার পরিকল্পনা করি আমরা দুই বন্ধু। সেই ভাবনা থেকে বিভিন্ন বাগান ও হার্টিকালচার থেকে অভিজ্ঞতা নেই। পরে বন্ধুর মা’র কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ২০২১ সালে ড্রাগন বাগান শুরু করি। তবে কিছুদিন পরে বন্যার কবলে পরে সব গাছ নষ্ট হয়ে যায়। পরে আবারও নতুন করে বাগান শুরু করি।
আর সাইফুল আদনান বলেন, বাড়ির পাশে ১৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। বিভিন্ন জায়গার বাগান, হার্টিকালচার ও ইউটিউবে ড্রাগন ফলের চাষের অভিজ্ঞতা নিয়ে সফলতার স্বপ্ন দেখি। এক পর্যায়ে সদরপুর উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ নিয়ে কাজ শুরু করি। আমাদের বাগানে আজ শত শত ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ কেজি ফল পাচ্ছি। এখন ফল বিক্রি করে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় হচ্ছে। আয়ের চেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আমাদের বাগান দেখতে ভিড় করে।
সদরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায় বলেন, ড্রাগন অনেক পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। এ ফল চাষে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। খাবারের পুষ্টির মানও নিশ্চিত করা যায়। সাইফুল ও রাকিবের মতো শিক্ষিত উদ্যোক্তারা কৃষিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছেন। যারা কৃষিতে আসছেন, তাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১১/০৭/২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.