এইমাত্র পাওয়া

মহিলা সহকর্মীকে কু*প্রস্তাবের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি ।।

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাকে কু-প্রস্তাব ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে অর্জুনা মহসীন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী জহুরুল এর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি উপজেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কাজী জহুরুল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওই শিক্ষিকার পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঐ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে অর্জুনা মহসীন উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটিসহ শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের বৈঠক হয়। এতে ওই বৈঠকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কাজী জহুরুল শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানি করার বিষয়টি স্বীকার করেন।

জানা যায়, উপজেলার অর্জুনা মহসীন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী জহুরুল বিগত ২ বছর ধরে একই স্কুলের শিক্ষিকাকে বিভিন্নভাবে অনৈতিক কাজের জন্য বারবার কু-প্রস্তাব দিত। পরে তার ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে ঐ শিক্ষিকা অভ্যন্তরিনভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেন। পরে এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের অন্য সহকর্মীদের বিষয়টি জানানো হয়। পরে ঘটনার বর্ণনা শুনে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একত্রিত হয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এরপর ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকদের সামনেই ঐ শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। বিষয়টি ঐ শিক্ষিকার পরিবার পর্যায়ে যাওয়ার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পরবর্তীতে প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে অভিযোগ জানান ঐ ভুক্তভোগী শিক্ষিকা। শুধু ঐ শিক্ষিকাই নয় তার আরো কয়েকজন শিক্ষিকাকে কু-প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অর্জুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈবুর রহমান, নুরুল ইসলাম খান জোসনা এবং অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কাজী জহুরুল অভিযোগকারী শিক্ষিকাসহ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা। এসময় প্রধান শিক্ষক কাজী জহুরুল সবার সামনে নিজের দোষ স্বীকার করেন।

অর্জুনা মহসীন উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষিকা জানান, প্রধান শিক্ষক তার ক্ষমতা ব্যবহার করে নারী শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানি করে। তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে ঐ শিক্ষিকার সাথে খারাপ আচরণ করেন কাজী জহুরুল । একই সাথে তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার ভয়ে অনেকেই প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষিকাকে ঐ প্রধান শিক্ষক গভীর রাতে মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের ম্যাসেজ পাঠাতো। পরে বাধ্য হয়ে এক শিক্ষিকা তার বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির বরাবর অভিযোগ দিয়েছে যেটা সত্য।

অভিযোগকারী শিক্ষিকা জানান, ক্ষমতার অপব্যবহার করতো সব সময়। ম্যাসেজে মোবাইলে এবং সরাসরি কু-প্রস্তাব দিতেন প্রধান শিক্ষক। মোবাইলে টাকাও পাঠিয়েছিল। এটি নিয়ে পারিবারিকভাবেও ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। পরে সহকর্মীদের কাছে বলার পরও প্রধান শিক্ষক ভালো হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে প্রতিকার চেয়ে ম্যানেজিং কমিটি বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অজুর্না মহসীন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী জহুরুল এর সাথে মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এছাড়া বিদ্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

অজুর্না মহসীন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দিদারুল আলম খান মাহবুব বলেন, শিক্ষিকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকেলে মিটিং করা হয়েছে। মিটিংয়ে প্রধান শিক্ষক তার দোষ স্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১১/০৭/২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading