নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: রাত পোহালেই পেশাজীবীদের বৃহৎ সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কলেজে জমে উঠেছে উৎসবের আমেজ। নির্বাচনের ঠিক তিনদিন আগে হঠাৎ একটি প্যানেলের সভাপতি শাহেদুল খবিরের বদলি নিয়েও চলছে নানাবিধ বিশ্লেষণ। তবে শিক্ষা ক্যাডারের বেশিরভাগ সদস্যরা মনে করছেন এটি শিক্ষা ক্যাডার বিরোধী একটা ষড়যন্ত্র। একটি পক্ষ নব আত্তীকৃত শিক্ষকদের ক্যাডারে ইনরোলমেন্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এখানে শিক্ষা ক্যাডারদের দায়িত্বশীল পর্যায়ের দু-একজন কর্মকর্তার সমর্থন রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব কর্মকর্তার অনেক আত্মীয়-স্বজন নব জাতীয়করণকৃত কলেজে রয়েছে এবং তাদেরকে ক্যাডার সুবিধা দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে এমনটাই অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
শাহেদুল খবির নব আত্তীকৃত শিক্ষকদের ক্যাডারে প্রবেশে বাঁধার কারণ বলেই তাকে সরিয়ে বিএনপি ঘরানার একজন কর্মকর্তাকে এই পদে বসানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র এই বিএনপি ঘরানার নব পদায়নকৃত পরিচালককে অন্যত্র পুনরায় বদলি করা হতে পারে বিষটি শিক্ষাবার্তা’কে নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষাবার্তা ডটকম একশত পঞ্চাশটি কলেজ ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দপ্তর হতে আগামীকাল নির্বাচনের তিনটি প্যানেলের পক্ষে জনমত জরীপ সংগ্রহ করেছে। নির্বাচনের জরীপে এগিয়ে রয়েছে শাহেদ-তানভীর- মোস্তাফিজ নেতৃতাধীন ‘গ’ প্যানেল। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে তানভীর হাসানের সাথে শওকত হোসেন মোল্লা এবং কয়েকটি সম্পাদকীয় পদে ‘গ’ প্যানেল ও ‘খ’ প্যানেলের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতার আভাস পাওয়া গিয়েছে। সভাপতি পদে কিছুটা ঠান্ডা যুদ্ধ হবে শাহেদুল খবির ও মামুনুল হকের মধ্যে। কেননা শাহেদুল খবিরের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সাহসী উচ্চারণের কাছে মামুনুল হকের অবস্থান নড়বড়ে। শিক্ষা ক্যাডারের তরুনদের পছন্দে এগিয়ে আছে শাহেদুল খবির ও তানভীর হাসান।
আঞ্চলিক নির্বাহী সদস্য পদে তিন প্যানেল হতেই পাশ করবে এমনটা জরীপে উঠে এসেছে। শিক্ষা ক্যাডারের বেশিরভাগ সদস্যই মনে করেন শাহেদুল খবিরের বলিষ্ট নেতৃত্বই নব সংকটের উত্তরণ ঘটবে এবং তিনিই সভাপতি পদের সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় নেতা।
উল্লেখ্য, সারা দেশে ২১৪ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। মোট ভোটার ১৩ হাজার ৫৯৬ জন। সারা দেশের ১১টি সাংগঠনিক শিক্ষা বিভাগে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাসহ সরকারি কলেজ শিক্ষক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম), শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ (টিটি কলেজ), জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কর্মরত ক্যাডার কর্মকর্তারা এ নির্বাচনে ভোট দেবেন।
প্রসঙ্গত, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন, পদোন্নতি, অধ্যাপক পদ তৃতীয় গ্রেডে উন্নীতকরণ, অর্জিত ছুটি প্রদান নিশ্চিত করা এবং আনুপাতিক হারে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডসহ প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি, চাকরির পাঁচ বছর পূর্তিতে ষষ্ঠ গ্রেড দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
গতকাল শুক্রবার শাহেদ-তানভীর-মোস্তাফিজ প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শিক্ষা প্রশাসনের আসন্ন নির্বাচনে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ অন্য বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।
যেসব বিষয় অগ্রাধিকার দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, এই প্যানেল তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয় ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে। অগ্রাধিকারের প্রথমে রয়েছে পদোন্নতির চলমান প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা, অধ্যাপকদের তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করা, গ্রেড বিবেচনায় প্রভাষকদের পদোন্নতি চালু করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে, সব অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে প্রাধিকারের ভিত্তিতে গাড়ি দেওয়া অধিদফতর, দফতর ও কলেজগুলোতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্রেডের পদ সৃষ্টি, সব কলেজে অতিরিক্ত একজন উপাধ্যক্ষের পদ সৃষ্টি করা।
এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর, নায়েম বিএমটিটিআইর বিতর্কিত নিয়োগ বিধিমালা বাতিলের চেষ্টা অব্যাহত রাখা সরকারি কলেজে ডরমিটরি স্থাপন, মাধ্যমিক ও কলেজের প্রশাসনিক দফতর স্থাপন এবং বিসিএস সাধারণ শিক্ষা একাডেমি প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নেওয়া।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৬/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.