ঢাকাঃ জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, মুছে যাক গ্লানি- এই প্রত্যয়ে পুরনো বছর ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে বিদায় জানিয়েছে জাতি। শনিবার পালিত হয়েছে বাংলা বছরের শেষ দিন ও চৈত্র সংক্রান্তি। এবার প্রস্তুতি ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে বরণের। ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে সব প্রস্তুতি। রাত পোহালেই শুরু হবে বর্ষবরণের নানা অনুষ্ঠান।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখে বর্ণিল উৎসবে মাতবে সারাদেশ। ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। রাজধানী এবং সারাদেশজুড়ে থাকবে বর্ষবরণের নানা আয়োজন।
‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩১’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। ছায়ানট ভোরে রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
এছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান আবশ্যিকভাবে জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে। বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস ও ইউনেস্কো কর্তৃক এটিকে বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। বাংলা নববর্ষে সকল কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের আয়োজন করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১৩ দফা নির্দেশনা
এদিকে এবারে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে আতশবাজি ও ভুভুজেলা নিষিদ্ধ ও বাংলা নববর্ষ নিয়ে অপপ্রচারকারীদের আইনের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদযাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৩ দফা নির্দেশনার কথা জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাগুলো হলো-
১. দেশব্যাপী বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, বৈশাখী মেলা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানসমূহে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও আয়োজকবৃন্দ সমন্বয় করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
৩. বাংলা নববর্ষ উদযাপন নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
৪. বাংলা একাডেমি ও বিসিক থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নববর্ষের মেলায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
৫. রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাতিরঝিল ও রবীন্দ্র সরোবরসহ দেশে যে সকল অনুষ্ঠান হবে তা সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করতে হবে।
৬. বর্ষবরণ অনুষ্ঠানগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতে হবে। নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বয় করে নিরাপত্তা দেবে।
৭. নববর্ষে কূটনৈতিক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও স্থাপনার বিশেষ নিরাপত্তা দেয়া হবে।
৮. নববর্ষ উদযাপনকালে ঢাকা মহানগরের অনুষ্ঠানসমূহে ও সারাদেশে অনুষ্ঠেয় অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সসহ ফায়ার সার্ভিস টিম থাকবে। মেডিকেল টিম থাকবে।
৯. বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে ইভটিজিং, ছিনতাই/ পকেটমারসহ যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে মোবাইল কোর্ট ও গোয়েন্দা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।
১০. বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো নিষিদ্ধ থাকবে।
১১. নববর্ষে দেশের কারাগারগুলোতে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হবে।
১২. কোনো ধরনের ফানুস বা আতশবাজি ফুটানো যাবে না।
১৩. বাংলা নববর্ষে মাদকের অপব্যবহার রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৪/০৪/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.